ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতাল বন্ধ

প্রকাশনার সময়: ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩০

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে একটি বেসরকারি হাসপাতাল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবুল হাদী মোহাম্মদ শাহ পরান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে চিকিৎসাসেবা প্রদান ও ডিগ্রিবিহীন চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন করানোর অভিযোগে ঢালী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল এবং গরীবে নেওয়াজ হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল সার্জন অফিস ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ঢালী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল এবং গরীবে নেওয়াজ হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিক চিকিৎসা প্রদান করে আসছিল। এর মধ্যে ঢালী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ৪ মার্চ নাগেরপাড়া ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান আজাদের স্ত্রী নাদিয়া বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন।

রাতে এক ডিপ্লোমাধারী চিকিৎসককে দিয়েই অ্যানেসথেসিয়া (চেতনানাশক ঔষধ) প্রয়োগ করে নাদিয়ার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া নবজাতকের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে নবজাতকের শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করেন হাসপাতালটির নার্স ও ডিগ্রিবিহীন চিকিৎসকরা। চিকিৎসা করতে গিয়ে তারা ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে নবজাতকের বুকে সিবিসি প্রয়োগ করতে থাকেন। অতিরিক্ত সিবিসি প্রয়োগ করায় বাচ্চার বুক নীল হয়ে আসে। পরে তড়িঘড়ি করে ওই নবজাতককে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান তারা, পরে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা হাবিবুর রহমান আজাদ বলেন, আমার সন্তান সিজারের পরও ভালো ছিল। কান্নার শব্দ আমরা শুনেছি। তারা আমার সন্তানকে আমার কাছে না দিয়ে বুকের মধ্যে চাপ দিতে থাকে। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চেপে জখম করে তারা বলে- আমরা এখানে কিছু করতে পারব না। আপনারা ওকে আইসিইউতে নিয়ে যান। এরপর আমার সন্তানকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হাদী মো. শাহ পরান বলেন, গোসাইরহাটে দুটি বেসরকারি হাসপাতাল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছি। এর মধ্যে ঢালী ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে দুটি নবজাতক মারা গেছে। নবজাতকের মৃত্যু ও ডিগ্রিবিহীন চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ