চাকুরি প্রদানসহ নানা কাজের কথা বলে মানুষের কাছে গিয়ে বিভিন্ন পরিচয় দিতেন তারা। তাদের কেউ র্যাবের অধিনায়ক, কখনও ডিসি, আবার এসপি, এমনকি জেল সুপারসহ বিভিন্ন পেশার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিতেন মানুষের কাছে। আর এ পরিচয় দিয়েই অর্থ হাতিয়ে নিতেন তারা।
সেই চক্রের মূলহোতাসহ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দিনগত রাতে কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী থেকে র্যাব-১৫’র সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
এ সময় চক্রের মূলহোতা তোরাব উদ্দিন ওরফে রেজাউল করিম ও চক্রের পাঁচ সহযোগীর কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, ৫টি ম্যাজিক ডলার, একটি মাইক্রো গাড়ী, ৮টি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন ও ১৪টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দুপুরে র্যাব-১৫ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশিখালীর মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে বর্তমানে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর হাসেরদিঘী ঘোনারপাড়ার বাসিন্দা তোরাব আলী শিকদার ওরফে রেজাউল করিম (৪০), চকরিয়ার খুটাখালীর উত্তর মেধাকচ্ছপিয়ার আবদুসাত্তারের ছেলে বাদশা (৩০), ফাসিয়াখালীর হাসেরদিঘীর জয়নাল আবেদীনের ছেলে তারেকুর রহমান (২০), একই এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মো. জোবায়ের (২৩), মাহমুদউল্লাহর ছেলে এমদাদ উল্লাহ মারুফ (২০) ও ইউনূস কবিরের মেয়ে মিশকাত জান্নাত জুলি (১৮)।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গত ২ থেকে ৩ মাস ধরে অভিযুক্ত প্রতারক তোরাব ও তার দলের সদস্যদের অনুসরণ করে আসছিল র্যাব। এই দলে ২০ জনের মত সদস্য রয়েছে। তারা কারাগার, আদালত ও থানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত। যাদের আত্মীয় স্বজনরা জেলে আছে, তাদের নম্বর নিয়ে জেল থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করতো এ প্রতারক চক্র।
র্যাব আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত প্রতারক তোরাব আলী কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করারও পরিকল্পনা করেছিল। এজন্য ১৫ থেকে ২০টি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হতে কোটি টাকার মত অনুদানও দিয়েছেন। এসব ঘটনা থেকে র্যাব ধারণা করেছে, গত কয়েক বছরে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তার চক্রের সদস্যরা।
এছাড়াও অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রতারক তোরাব ১১টি বিয়ে করার কথাও র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে বলে জানায়।
এ র্যাব কর্মকর্তা জানান, এসব নারীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১০টি মোবাইলও উদ্ধার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করে চকরিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ