আনন্দঘন পরিবেশে রাজধানীর উত্তরার এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও ২৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান (আক্তার)।

স্কুলের ২০ জন শিক্ষার্থীর সঞ্চালনায় সোমবার (৪ মার্চ) উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টর প্লে গ্রাউন্ডে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কেমব্রিজ অ্যাসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক মহেশ শ্রীবাস্তব, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আফসার উদ্দিন খান, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা, ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার শাহিন রেজা, পিয়ারসন পিএলসির রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার লিটন আব্দুল্লাহ, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের পরিচালক অপারেশন্স জুনায়েদ আহমেদ, ক্যামব্রিজ ইউনিভারসিটি প্রেসের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার কাজী নাহিয়ান, ক্যামব্রিজ এসেসমেন্ট ইংলিশের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার কায়েস উদ্দিন আহমেদ ও অন্যান্য আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ ও ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য, উত্তরা শাখার সকল টিচিং ও ননটিচিং স্টাফ, অন্যান্য নেতারা, সরকারি-বেসরকারি বিভাগীয় কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, অন্যান্য অতিথি এবং সভাপতিকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল উত্তরা শাখার কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

শিক্ষার্থীদের প্যারেড ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শেষে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ‘আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর অবদান’ শীর্ষক একটি ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। ডিসপ্লের মাধ্যমে বাংলাদেশের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক পরিচয় ফুটিয়ে তোলা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে অতিথিরা জাতীয় পতাকা ও স্কুলের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে তারা বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

এরপর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ফায়েজ মাসিরা নেতৃত্বে শুরু হয় মার্চ পাস্ট। মার্চ পাস্ট শেষে দেশাত্ববোধক গানের সঙ্গে ডিসপ্লে পরিবেশন করে উত্তরা শাখার এলিমেন্টারি সেকশনের সম্মিলিত দল। এরপর শুরু হয় শ্রেণিভিত্তিক ও ছাত্রছাত্রীদের পৃথক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।

খেলা শেষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হওয়াদের পুরস্কার হিসেবে মেডেল দেওয়া হয়। আর যারা জিততে পারেনি তাদের দেওয়া হয় সান্ত্বনা পুরস্কার। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা শেষে ছিল মুসলিম পারসোনা ড্রেস আপ চ্যালেঞ্জ (যেমন খুশি তেমন সাজো) প্রতিযোগিতা। এজন্যও পুরস্কারের ব্যবস্থা ছিল। সবশেষে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান (আক্তার) শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম ও সৃজনশীল কাজে অংশগ্রহণ, চারিত্রিক বিকাশ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য শিক্ষার্থীদের উপদেশ দেন। সেইসঙ্গে ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যের শুরুতে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান সোহাগ সকল শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান। সেইসঙ্গে সবাইকে ভালো মানুষ ও দেশপ্রেমিক হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, একটি থিওরি আছে, যার নাম ১০ হাজার ঘণ্টা থিওরি। কোনো একজন মানুষ যদি ১০ হাজার ঘণ্টা কোনো একটি বিষয় নিয়ে লেগে থাকেন, তবে সেই বিষয়ে তিনি পণ্ডিত হয়ে যাবেন।

অধ্যক্ষ বলেন, একটি মোমবাতি থেকে যেমন অসংখ্য মোমবাতি জ্বলে; তেমনি একজন আলোকিত মানুষ অসংখ্য আলো ছড়িয়ে আলোকিত সমাজ গড়ে। তিনি শিক্ষার্থীদের বেশি করে বই পড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে পরীক্ষায় ভালো ফল করার প্রতিও জোর দেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল উত্তরা শাখা পরিবারের ২৩ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধে রনাঙ্গণের সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা জানায় এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল উত্তরা শাখা। এ সময় বক্তারা ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান তুলে ধরেন।

নয়াশতাব্দী