চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সিসা তৈরি কারখানা। পুরোনো ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি করায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় হুমকিতে রয়েছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত গ্রাম ও উক্ত গ্রামের সড়কের পাশে প্রায় মাস খানেক আগে এরশাদ নামের এক ব্যক্তির জমি ভাড়া নিয়ে বগুড়ার শাহীন এই সিসা কারখানা গড়ে তুলেছেন। এর আগে এই কারখানা ছিল ঢাকার আশপাশ এলাকায়। প্রশাসনের অভিযানে সেখান থেকে প্রত্যন্ত এই এলাকায় কারখানাটি স্থাপন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিসা তৈরির কারখানায় প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করছেন। কেউ ব্যাটারি ভাঙছেন, কউবা আবার ভাঙা ব্যাটারির প্লেট এক জায়গায় স্তুপ করছেন। এসব প্লেট গভীর রাতে আগুনে পুড়িয়ে সিসা তৈরি করা হয়। এই কারখানায় কাজ করা শ্রমিকরা হলেন- বগুড়া, গাইবান্ধা ও নওগাঁ জেলার বাসিন্দা।
কারখানায় কাজ করা গাইবান্ধার লতিফ বলেন, বগুড়ার শাহীন এই কারখানার মালিক। মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে এখানে এসেছি। মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ করি। বিভিন্ন জেলা থেকে পুরানো ব্যাটারি সংগ্রহ করে এখানে এনে পুড়িয়ে সিসা বের করি। সিসার ক্ষতিকারক পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্মন্ধে আমার জানা নেই। তবে এর আগে যেখানে ছিলাম সেখানে প্রশাসনের লোকজন অভিযান দিয়ে কারখানা গুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
স্থানীয় মনু মিয়া বলেন, সড়কের পাশে টিন আর চাটাই এর বেড়া দিয়ে ওরা কি যেন করে। সারাদিন এখানে ট্রাক আসে আর যায়, প্রতিদিন গভীর রাতে প্রচুর আগুন জ্বলতে দেখি। তখন কেমন জানি ঝাঝালো গন্ধ আসে।
একই এলাকার লিয়াকত বলেন, প্রায় একমাস আগে এখানে এসে ব্যাটারি ভাঙার কাজ শুরু করেছে। রাতে আগুনও জ্বালায়। যখন আগুন জ্বালায় তখন চোখ মুখ জ্বলে। মাঠের গাছগুলোর পাতা দিন দিন লাল হয়ে যাচ্ছে।
চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, ব্যাটারির বর্জ্য পুড়িয়ে সিসা তৈরি করলে, আশপাশে থাকা মানুষের শরীরে পয়জনিং (রক্তকণিকা ও মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতি করা) সৃষ্টি করে। এতে মানসিক বিকৃতি, রক্তশূন্যতা ও মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু জানতে পেরেছি এই কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ