গাজীপুরে মোবাইলের সিম এবং ব্যাংকের কার্ড তৈরির এক কারখানায় নাইট্রোজেন গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক প্রকৌশলী দগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ সময় চীনের নাগরিকসহ কারখানার অন্তত ৮ জন কর্মী দগ্ধ ও আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মহানগরীর সদর থানাধীন ভারারুল বটতলা এলাকাস্থিত ইন্টেলিজেন্ট কার্ড লি. নামের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম- লিখন মিয়া (২৪)। তিনি গাইবান্ধা জেলার সাদুল্ল্যাপুর থানার তিলক পাড়া এলাকার সেকান্দর আলীর ছেলে এবং ওই কারখানার সাব স্টেশনের সহকারী প্রকৌশলী (মেইনট্যানেন্স)।
কারখানার চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ইন্টেলিজেন্ট কার্ড লি. নামের এ কারখানায় সবধরনের মোবাইলের সিম এবং বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড তৈরি করা হয়। এ কারখানায় ১০০ জনের মত কর্মী কাজ করে। বুধবার দুপুরে ব্যাংকের কার্ড তৈরির জন্য একটি লেমিলেশন মেশিন প্রতিস্থাপন করছিলেন চীনের দুইজন নাগরিক সহ ১০/১২ জন কর্মী। মেশিন প্রতিস্থাপনের সময় মেশিনে সংযুক্ত নাইট্রোজেন গ্যাস সিলিন্ডার হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই লিখন মিয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান। এ সময় চীনের নাগরিকসহ অন্তত ৮ জন কর্মী দগ্ধ ও আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চীনের নাগরিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ জানান, বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের জয়দেবপুর স্টেশনের ২ টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতরা হলেন- চীনের নাগরিক মি. লিউ ইয়াং সিন (৪২), কারখানার কোয়ালিটি কন্ট্রোলার নওগার বাদলগাছী থানার দনইল গ্রামের কাজী আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ শাহরুখ হোসেন (২০), লেমিনেশন ইনচার্জ ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ভাওয়ালিয়া পাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে মো. শাহজাহান (৪৫), দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানার দক্ষিণ বোয়ালমারী গ্রামের মো. মোজায়ের হোসেনের ছেলে মনিরুজ্জামান (৩৭), টাঙ্গাইল সদরের চকদই এলাকার রহমত ব্যাপারীর ছেলে মো. আহমেদ হোসেন (৩৩) এবং একই জেলার মো. মিজানুর রহমান (৩০)।
এদের মধ্যে চীনা নাগরিক লিউ ইয়াং সিনকে ঢাকা বারডেম হাসপাতাল এবং অন্যদেরকে গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, হতাহতদের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ