ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬

৩ বছরেও অগ্রগতি নেই হাতীবান্ধার সাইলো নিমার্ণের কাজ

প্রকাশনার সময়: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:০৬ | আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:১৭
প্রতীকী ছবি

ধান সংরক্ষণের জন্য দেশের ২৪ জেলায় ২৯টি আধুনিক সাইলো নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় কাজ শুরু করতে পারেনি। দুইদিন আগে প্রকল্প কর্মকর্তা শীদুল ইসলাম হাতীবান্ধায় সাইলো নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেছেন।

২০২১ সালের ৮ জুন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করে ছিলেন। যেখানে দেশের ২৪ জেলায় ২৯টি আধুনিক সাইলো নির্মাণের জন্য এক হাজার ৪০০ কোটি ৩৭ লাখ টাকার অর্থ একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল। ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।

জানা গেছে, ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক আধুনিক সুবিধাদি নিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে সারা দেশে ১.৫০ লাখ মে.টন ধান সংরক্ষণ ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। কৃষকের কাছে ধান সংগ্রহ করে মিল মালিকদের দিয়ে চাল করে সংরক্ষণ করার পদ্ধতি চালু রয়েছে।

এই প্রকল্পে প্রথমে ২৯টি সাইলো নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। দেশব্যাপী কৃষকের কাছে সরাসরি ধান কেনার লক্ষ্য নিয়ে এসব সাইলো নির্মাণের প্রকল্পটি খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে ছিল। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে এক হাজার ৪০০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ধরা হয়। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে (৫ বছরের মধ্যে) বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

রহস্যজনক কারণে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা এলএসডি গোডাউন চত্বরে ৫০০০ মে.টন ধারণ ক্ষমতার সাইলো নির্মাণের কাজ এখনো শুরুই করতে পারেনি। ২৩ ফেব্রুয়ারি সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের এফপিএমইউ ইউনিটের ডিজি শহীদুল আলম (প্রকল্পের পিডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) এলএসডি গোডাউন চত্বর পরিদর্শন করেন। এতেই জনসাধারণের নজরে আসে সাইলো নির্মাণের প্রকল্পটি।

সাইলোতে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ধান ঝাড়াই, বাছাই, শুকানো, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি থাকবে। মজুদ খাদ্য শস্য দুই-তিন বছর পুষ্টিমান বজায় থাকতো। আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মজুদ শস্যের মান নিয়ন্ত্রণ করা ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি এলাকায় ৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার ২৯টি ধানের সাইলো নির্মাণ করা হবে। এসব সাইলোতে ট্রাক ও বাল্ক ওজন যন্ত্র, কনভেয়িং ও বাকেট এলিভেটর সিস্টেম সংযোজন থাকবে। সাইলোর সিভিল ফাউন্ডেশন, মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন স্থাপন সহ ২৯টি কেন্দ্রে সীমানা প্রাচীরও নির্মাণ করা হবে। নিরাপদ ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ও কৃষকের ন্যায়্যমূল্য নিশ্চিত করা প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।

লালমনিরহাট জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন আগে প্রকল্প কর্মকর্তা সাইলো নিমার্ণ প্রকল্পের জায়গা পরিদর্শন করেছেন। এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কাজ শুরু করা যায়নি। তিনি অবশ্য এ জন্য করোনাকালীন পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন।

এদিকে, সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটটি এখনো আপডেট করা হয়নি। সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক বদলি হয়ে শিল্পমন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু এখনো তার নাম প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছে। সরকার তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রগঠন করতে উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু রহস্যজনক কারণে মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারের সকল দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলো আপডেট নেই।

যেসব জায়গায় সাইলো নির্মাণ হবে- কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর, ফরিদপুর সদর, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, জামালপুরের মেলান্দহ, শেরপুরের শ্রীবর্দী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, নোয়াখালী সদর, কুমিল্লা সদর, দিনাজপুর সদর ও বিরল, ঠাকুরগাঁও সদর, পঞ্চগড়ের বোদা, লালমনিরহাটের হাতিবান্দা, নওগাঁর শিবপুর, রানীনগর, পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রাম, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল, সিলেটের কানাইঘাট, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, নড়াইল সদর, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, পটুয়াখালী সদর ও কলাপাড়া এবং ভোলার চরফ্যাশন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ