ফরিদপুরের নগরকান্দায় তপন সাধু নামে এক ফকির তার ভক্তদের টানা তিনদিন নৌকায় ভেজানো দুধ-চিতই পিঠা খাওয়ালেন। এই পিঠা খেলেই বাড়বে দৈবশক্তি জানান, তপন ফকির সাধু।
উপজেলার তালমা ইউনিয়নের সদরবেড়া গ্রামে ফকিরের বাড়িতে তিন দিনব্যাপী এই ব্যতিক্রমধর্মী নৌকায় ভেজানো দুধ-চিতই পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন তিনি।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু করে মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত এ পিঠা উৎসব চলে।
এলাকাবাসী জানান, ৬০ বছর বয়সী তপন সাধু গত তিন যুগ ধরে নৌকায় ভেজানো দুধ-চিতই পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছেন। এ উৎসব উপলক্ষে সেখানে মেলাও হয়। মাটির চুলায় ২০টি পাতিলে ভক্তরা প্রথমে চিতই পিঠা তৈরি করেন। পরে ওই পিঠা বাড়ির মাঠে থাকা একটি বিশেষ নৌকার ভেতরে দুধ ও খেজুরের রসের মধ্যে ভেজানো হয়।
তারা আরও জানান, সেখান থেকে বাটিতে করে নিজ হাতে ভক্তদের খাওয়ান তপন সাধু। তাই প্রতিবছর এই উৎসবে শত শত ভক্ত পরিবার-পরিজন নিয়ে পিঠা খেয়ে যান। অনেকে রোগ-বালাই থেকে মুক্তির আশায় এই পিঠা খেয়ে থাকেন।
পিঠার তৈরির বিষয়ে তপন ফকির সাধু বলেন, তিন দশক ধরে এই আয়োজন করে আসছি। প্রতি বছর মাঘ মাসের পুর্ণিমার রাতে এই পিঠা মেলার আয়োজন শুরু করা হয়। টানা তিন দিন আমার বাড়িতে আয়োজনের মাধ্যমে এলাকাবাসী ও ভক্তদের নৌকায় ভেজানো দুধ-চিতই পিঠা খাওয়ানো হয়। প্রতিদিন ৫ মণ দুধ, এক মণ খেজুরের রস জ্বালিয়ে তার মধ্যে ১০ হাজার পিস চিতই পিঠা ভেজানো হয়। এই পিঠা খেলে দৈবশক্তি বাড়ে।
নাজমুল শেখ নামে এক ভক্ত বলেন, আমরা প্রতিবছর পরিবার নিয়ে এসে নৌকায় ভেজানো দুধ-চিতই পিঠা খেয়ে যাই। তপন ফকির নিজে নৌকা থেকে পিঠা তুলে বাটিতে করে আমাদের হাতে ধরিয়ে দেন। আমরা সেগুলো খাই। আমাদের বিশ্বাস এই পিঠা খেলে অনেক উপকার হয়।
তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন মিয়া বলেন, ৩০ বছর ধরে নৌকায় ভেজানো দুধ-চিতই পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছে তপন ফকির সাধু। এই পিঠা খেয়ে অনেকে উপকার পেয়েছেন বলে শুনেছি। আমার পক্ষ থেকে প্রতিবছর এই পিঠা উৎসবে সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ