ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

অব্যাহতি নেয়া ২ শিক্ষককে ভুয়া ইনডেক্সে পুনরায় নিয়োগ

প্রকাশনার সময়: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:১৬

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাঠগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক ভুয়া ইনডেক্সে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিললে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে চাকরিকালীন নেয়া সরকারি অংশের টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। সে সময় ওই দুই শিক্ষক চাকরি থেকে পদত্যাগও করেন। কিন্তু দুই বছর যেতে না যেতেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত এ দুই শিক্ষককে ভুয়া ইনডেক্সে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন।

নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদ্বয় এমপিওভুক্তও হয়েছেন। গত ১১ বছর ধরে গ্রহণ করছেন সরকারি বেতন- ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল মহেশপুরের কাঠগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধিসহ সাধারণ শিক্ষকদের না জানিয়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে ওলিয়ার রহমান (ইনডেক্স: ১০৫৭৪০৮) ও কৃষি শিক্ষক পদে মোমিনুর রহমানকে (ইনডেক্স ১০৫৭৪০৭) নিয়োগ দেন। অবৈধ এ নিয়োগের প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি ও সাধারণ শিক্ষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার এনফোর্সমেন্ট ইউনিট বিষয়টি তদন্ত করেন।

তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দুটি পৃথক স্মারকে ২০১১ সালের ১ মে থেকে ২০১৩ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বেতন-ভাতার সরকারি অংশ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী সরকারি অংশের ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ২শ টাকা সোনালী ব্যাংকের ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়। টাকা ফেরত দেয়ার পর এ দুই শিক্ষক ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল স্কুল থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের মাত্র ৪৭ দিন পর ২০১৩ সালের ১৮ মে ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় উক্ত দুই শিক্ষক এ প্রতিষ্ঠানে একই পদে একই ইনডেক্স ব্যবহার করে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১৩ সালের ১লা জুলাই তারিখে এমপিও ভুক্তও হন।

বর্তমানে এ দুই শিক্ষক বিদ্যালয়ে বিদ্যমান থেকে সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। নিয়ম অনুযায়ী সহকারী প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনরকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে রেজাউল হক নামে একজন জুনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। ২০১৩ সালের ১০ জুন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষক হিসেবে তবিবার রহমানকে নিয়োগ দেন। এরপর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য হয়। সভাপতি আমিনুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক তবিবার রহমান আগের মতোই শিক্ষক প্রতিনিধি ও সাধারণ শিক্ষকদের বিষয়টি না জানিয়ে এ দুজনকেও নিয়োগ দেন। এ নিয়োগে প্রার্থীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়ার জোর অভিযোগ রয়েছে।

নিয়োগে অর্থ লেন-দেন, ভুয়া ইনডেক্সে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, কত লোকই কত কথা বলে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের সাথে কথা বলেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তবিবার রহমান বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী পদে নিয়োগে কোন টাকা নেয়া হয়নি। ইনডেক্স জালিয়াতির বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ইনডেক্সে জালিয়াতি হয়নি। নিয়ামানুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সরকারি অংশের টাকা কেন ফেরত দেয়া হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ