ঢাকা, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬

টুকটুকে লাল মরিচে কৃষকের মুখে ফুটফুটে হাসি 

প্রকাশনার সময়: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৮

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকের খেত আর আঙিনা জুড়ে এখন শুধু মরিচ আর মরিচ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে চওড়া হাসি।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৮০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায, উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চরকাটি হারী গ্রামে মাঠের পর মাঠ সবুজ খেত। তার ভেতর উঁকি দিচ্ছে লাল-সবুজ-কালচে মরিচ। কিষান-কিষানি বেছে বেছে লাল টুকটুকে পাকা মরিচ তুলছেন। মরিচের সেই লাল আভা ছড়িয়ে পড়ছে কৃষকের চোখে-মুখে। বিস্তীর্ণ জনপদে বছরের পর বছর ধরে মরিচ চাষ হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জেগে ওঠা চরে চাষ হয় এ ফসলের। এ মরিচ বিক্রির টাকায় অনেক কৃষকের সারা বছরের সংসারের খরচ জোগাড় হয়ে যায়।

কৃষকেরা জানান, কার্তিক মাসে মরিচের জমি তৈরি করেন তারা। অগ্রহায়ণ মাসে লাগান বীজ। চলতি বৈশাখ মাসে শুরু হয়েছে মরিচ তোলা। এ সময় কাঁচা মরিচ বিক্রির পর, পাকা মরিচগুলো শুকানো হয়। শুকনো মরিচ সংরক্ষণ করে বছরের যেকোনো সময় বিক্রি করা যায়।

কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার খেত থেকে উঠানো পর্যন্ত এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে গড়ে ১০-১৫ হাজার টাকা এবং বিক্রি করা হয় ১৮-২০ হাজার টাকা ।

এখন প্রতি কেজি শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় জানিয়ে চাষিরা বলেন, অথচ গত বছর প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। এর আগের দুই বছরও প্রায় একই দামে বিক্রি হয় মরিচ। চরকাটি হারী এলাকার মরিচ চাষি বাছেদ মিয়া বলেন, অনক আশা করে এইবার মরিচের আবাদ করেছিলাম। ভালো দামও পাচ্ছি। শুকনো মরিচ ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। বেশি দামে কিনতে হয়েছে সার ও কীটনাশক। শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ হয়েছে। সবমিলিয়ে এক একর জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে, এক একর জমিতে মরিচ উৎপাদিত হয়েছে ৩০০ কেজি। যা বিক্রি করে ৭২০০০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। বাকি মরিচ বিক্রি করলে অধিক লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা সদর বাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ী রেনু বলেন, উপজেলায় এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান মূল্যেও লোকসানের মুখে পড়বেন না চাষিরা। তবে বাইরের মরিচ বাজারে এলে দাম আরও কমে যাবে। এতে চাষিরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম শাহজাহান কবির জানান, চাষিরা গত এক মাস ধরে নতুন মরিচ তুলতে শুরু করেছেন। প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি পর্যন্ত মরিচ উৎপাদিত হয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।

দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে শাহজাহান কবির বলেন, এখন যে দামে মরিচ বিক্রি হচ্ছে, তাতে চাষিদের লোকসানের আশঙ্কা আছে বলে মনে হয় না। কারণ মরিচের উৎপাদন তো বেশি হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/টিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ