বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১

মালঞ্চি রেলস্টেশন এখন খেলার মাঠ!

প্রকাশনার সময়: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:২৮ | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:৩৬

প্রায় ৬ মাস পূর্বেও যে স্টেশনটি রাতের আঁধারে ভূতুড়ে অবস্থায় পরিণত হতো, দিনের বেলায় মাত্র দুটো লোকাল ট্রেন থামলেও প্লাটফর্ম না থাকায় অসুস্থ, বৃদ্ধ, বাচ্চা ও নারীদের উঠা নামা করতে মই ব্যবহার করতে হতো। তবে অবশেষে স্টেশনটি চালু হলেও ৪ মাসের মধ্যেই আবারও বন্ধ হয়ে যায় ১৯২৭ সালে স্থাপিত উত্তরবঙ্গের পুরনো স্টেশনের মধ্যে অন্যতম মালঞ্চি রেলস্টেশন। তাই বন্ধ স্টেশনে প্রতিদিন বিকেলে পাড়ার ছেলেদের ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়।

জনবল সংকট দেখিয়ে বন্ধ করা হয় চালু হওয়া নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি রেলস্টেশন। চলতি মাসে থেকে স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০১৩ সালে জনবল সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর স্টেশনটি সীমিত পরিসরে চালু করা হয়। তবে স্টেশনটি বন্ধ হওয়ায় আবারও যোগাযোগ বিড়ম্বনায় পড়লেন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষসহ কাদিরাবাদ সেনানিবাসের কর্মকর্তা ও সৈনিক ছাড়াও বাউয়েট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ ছাড়া ব্যাপক কৃষিপণ্য পরিবহণে বিড়ম্বনা ও বাড়তি ব্যয় নিয়ে কৃষকরাও বিপাকে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্টেশনটি সীমিত পরিসরে চালু হলেও আশার আলো দেখেছিলেন স্থানীয় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। তবে হঠাৎ করে সে আলো নিভে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন সকলেই।

স্টেশন এলাকায় যারা চা,মুদি, কনফেকশনারি ব্যবসা করতেন তারা জানান, স্টেশনটি চালু হওয়ার পর বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেন ক্রসিং বিরতির জন্য অনেক ক্রেতার সমাগম হতো, আমাদের ব্যবসাও আগের তুলনায় ভালো হতো। তাই অনেকেই ঋণ নিয়ে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে দিলাম কিন্তু এমন ভাবে স্টেশনটি বন্ধ হওয়ায় আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এলাকাবাসী দ্রুত স্টেশনটি চালুর দাবি জানান।

জানা গেছে, এ উপজেলায় যোগাযাগের ক্ষেত্রে সড়ক পথে সরাসরি বাস যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। এখানে কোনো বাস টার্মিনাল না থাকায় রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রেলই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম বাগাতিপাড়ার মানুষের। তাই ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মালঞ্চি রেলস্টেশন। উপজেলাবাসীসহ পাশের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরাও যাতায়াত করতেন। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে ২০১৩ সালে স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়ায় টিকিট কাউন্টার, স্টেশনমাস্টার কক্ষ এবং যন্ত্রপাতির বেহাল দশা হয়ে পড়ে।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেশনটি সংস্কার ও চালু করার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এতে স্টেশনের সংস্কার কাজ করা শেষে একজন স্টেশন মাস্টার ও তিনজন পয়েন্টস ম্যান নিয়ে স্টেশনটি গত বছরের ১০ অক্টোবর সীমিত পরিসরে চালু করা হয়।

মালঞ্চি স্টেশনে স্বল্প দিনের দায়িত্ব পালন করা স্টেশন মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন জানান, জনবল সংকটের কারণে পুনরায় স্টেশনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। লোকবল নিয়োগ হলে চালু করা হবে বলে জানতে পেরেছি।

এবিষয়ে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, জনবল সংকটের কারণে স্টেশনটি পুনরায় বন্ধ হয়েছে, তবে স্টেশনটি চালু করা জরুরি। আশা করছি দ্রুত স্টেশনটি চালু করা হবে।

স্টেশনটি পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু হলে রেল ক্রসিং সুবিধার পাশাপাশি সিডিউল বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন রেল সংশ্লিষ্টরা।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ