সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার আছে মাত্র ৫০টি বিদ্যালয়ে। বাকি ৮৬টি বিদ্যালয়ে জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্য নেই কোনো শহীদ মিনার।
তেমনি উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও নেই শহিদ মিনার। বিদ্যালয়ের কমলমতি শিক্ষার্থীরা জাতীয় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে কাদা মাটি ও কাঠ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তা দেখে ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তি আপ্লুত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন- ছাত্র/ছাত্রীদের তৈরি সুন্দর শহীদ মিনার, শুভ কামনা তোমাদের জন্য, মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ে বড় হও।
জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চৌবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ও ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের সামনে ওই অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করেন। বিদ্যালয়টি ১৯৯২ সালে স্থাপিত হয়। পূর্বে বেসরকারি রেজিষ্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে স্থাপিত হলেও বর্তমানে তা সরকারিকরণ হয়েছে। এটি উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে চৌবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত। এর অবকাঠামো বলতে ৬ রুম বিশিষ্ট একটি পুরাতন ভবন আছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধানসহ চার জন সহকারী শিক্ষক এবং ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৯৩ ছাত্র ছাত্রী পড়ালেখা করছে।
৫ম শ্রেণির ছাত্র আদিত্য সরকার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নাই। একই কথা বললেন লক্ষী ভৌমিক, সামিয়া খন্দকার, শ্রাবন্তী সরকার, উম্মে হাবিবা, মুশফিকা, রাবেয়া সার্থকী, তনয়সহ আরো অনেকেই। আমরা শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাইতে পারি না। এজন্য আমরা সবাই মিলে ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে শহিদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছি। কাগজে কলমে শহীদ মিনার অংকন করেছি অনেকবার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জন প্রতিনিধিদের কাছে বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি করছি। যাতে সামনের বছর স্থায়ী শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানে পারি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছা. রেহানা খাতুন জানান, স্থায়ী শহিদ মিনার না থাকায় দিবসগুলোতে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া কষ্ট হয়। এদিকে সকল জাতীয় দিবসগুলো পালনে বিভাগীয় নির্দেশনা থাকে, সেহেতু দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ হওয়া আবশ্যক মনে করি।
বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক বলেন, আমার ইউনিয়নে সকল উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদাসায় শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এর যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নাই, সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হচ্ছে। আগামীতে সকল প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান জানান, তাড়াশ উপজেলায় ১৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এরমধ্যে উপজেলায় প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০টি বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। অবশিষ্টগুলোতে দ্রুত সময়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ