জামালপুরের মেলান্দহে ২নং চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বজনদের বিরুদ্ধে টেন্ডার ছাড়াই বিদ্যালয়ের গাছ কেটে নেওয়া ও জমি দখল করে মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যালয়টির বাম পাশে মাঠ দখল করে মাটি কেটেছে। পড়ে আছে দুইটি মেহগনি ও একটি বরই গাছের গুড়ি ।
জানা যায়, স্থানীয়রা প্রথমে গাছ কাটতে নিষেধ করেন। তারপর প্রধান শিক্ষক বলেন, গাছ কাটতে নিষেধ করলে তার পরিবারের উপর চাপ যাবে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এ কথা শুনে স্থানীয়রা সরে যায়। তাদের মতে, গাছ তিনটির মূল্য ২০ হাজার টাকা। প্রধান শিক্ষকের ইন্ধনে তার শ্বশুর বাড়ির নওশাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি মাটি কেটে মাঠের একাংশ দখল করছে ও গাছ কেটেছে।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক জুলেখা খাতুনকে পাওয়া যায়নি। তিনি জরুরি কাজে উপজেলা সদরে যান বলে জানান সহকারী শিক্ষকরা।
সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসেছে এমন খবরে পাশের স্কুল থেকে দ্রুত চলে আসেন প্রধান শিক্ষকের স্বামী সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মোতালেব। তিনি এসে প্রথমে প্রধান শিক্ষক দাবি করেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে বলেন, আমি প্রধান শিক্ষকের স্বামী। আমার সাথে কথা বললেই হবে।
গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে গাছ কেটেছে সে আমার বংশের লোক। সে উগ্র প্রকৃতির। গাছ কাটা নিষেধ করলে আমার পরিবারের উপর চাপ যাবে। তাই নিষেধ করা হয়নি। উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে বলেন, প্রশাসন কি করতে পারবে? তারা এসে বলে তো চলেই যাবে। এলাকার বিষয় এলাকার লোক দিয়ে সমাধান করতে হবে। এলাকার লোকজন নিয়ে বসবো। দেখি, কি সমাধান হয়।
কথা বলার এক পর্যায়ে মুঠোফোনে ডেকে আনেন এলাকার বাসিন্দা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আ. মজিদকে। তিনিও এসে প্রধান শিক্ষকের পক্ষে সাফায় করেন। এলাকার লোকজন নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত নওশাদ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
মেলান্দহ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী চাকদার বলেন, ২নং চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বিষয়টি জেনেছি। সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইয়ুল ওয়াসীমা নাহাত (অতি. দায়িত্ব) বলেন, সাংবাদিকের মাধ্যমে শুনেছি। বিষয়টি দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ