কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক অভিভাবককে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় আহত সেই কর্মচারীর মাথা ফেটেছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত কর্মচারীর নাম জসিম উদ্দিন। তিনি সেই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্তরত। তাকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার এসএসসি ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষার দিন সকাল নয়টা থেকে থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্যদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন কেন্দ্র সচিব মো. তৈয়ব আলী। সচিবের নির্দেশ অনুযায়ী, গেটে দায়িত্ব পালন করছিলেন ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির দুই কর্মচারী জসিম উদ্দিন ও শফিকুল ইসলাম বাদল। এসময় রমনা মডেল ইউনিয়নের টোনগ্রাম এলাকার জাফর হোসেনের ছেলে এনামুল হক নিজেকে অভিভাবক দাবি করে জোরপূর্বক কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হয়।
পরে গেটে দায়িত্বরতদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে মাথায় আঘাত ও ধাক্কা দিয়ে জসিম উদ্দিনের মাথা ফেটে দেন এনামুল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক শাহাজাহান আলী তাকে নিবৃত করেন। পরে অভিযুক্ত এনামুল সেখান থেকে সটকে পড়েন। ছাত্রলীগ নেতা শাহাজাহান আলী এবং অভিযুক্ত এনামুল হক আপন জেঠাতো ভাই বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, উনি (এনামুল) পরীক্ষার্থী না, তবে কোনো কারণ ছাড়াই কেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে আমরা বাধা দিই। একপর্যায়ে আমার ওপর চড়াও হয়ে মারধর ও হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মাথা ফেটে যায়। পরে সেখানে উপস্থিত লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। মাথায় দুটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
তবে অভিযুক্ত এনামুলকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক শাহাজাহান আলী বলেন, ‘এনামুল আমার আপন চাচাতো ভাই হয়। তার ছোট বোন ওই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল। কলম দেওয়ার জন্য যেতে চাইছিল, কিন্তু তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে গেটে দায়িত্বরত জসিম উদ্দিনের মাথা ফেটে যায়। তবে বিষয়টি আপোষ মীমাংসার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।’
কেন্দ্র সচিব ও থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী জানান, বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এবিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্র সচিব তৈয়ব আলীকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ