সাদা রঙের ফুলকপি খেয়ে অভ্যস্ত চুয়াডাঙ্গার মানুষ এখন পাচ্ছেন রঙিন ফুলকপি। রঙ দেওয়া নয়, প্রাকৃতিকভাবেই হলুদ ও বেগুনি রঙের এ ফুলকপির চাষ হয়েছে সদর উপজেলার হুচুকপাড়া গ্রামে। ইউটিউব দেখে প্রথমবারের মতো ১৫ কাঠা জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মানিক রতন।
সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হুচুকপাড়ার বাসিন্দা মানিক রতন। বাবা মারা যাওয়ার পর ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি চাষবাদ শুরু করেন। নতুন নতুন ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। ইউটিউব দেখে এ বছর রঙিন ফলকপি চাষে আগ্রহী হন তিনি। রঙিন ফুলকপির বীজ দেশের বাজারে না পেয়ে ভারতে ছুটে যান। সেখানেও বীজ পেতে দেরি হওয়ায় দেশে ফিরে আসেন। এরপরে গ্রামে সিনজেনটা কোম্পানির প্রতিনিধির মাধ্যমে রঙিন ক্যারেনটিনা ও ভেলেনটিনা জাতের ২০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরির জন্য বপণ করেন। যা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্য চারা লাগানোর উপযুক্ত হয়।
এবিষয়ে মানিক রতন জানান, সাদা ফুলকপি চাষের মতো রঙিন ফুলকপিও একইভাবে চাষ করতে হয়। ১৫ কাঠা জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষে তার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। তার গাছে ৩ হাজার ৫০০টি হলুদ ও বেগুনি জাতের ফুলকপি ফলেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে সাদার তুলনায় রঙিন ফুলকপির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি।
আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ মানিক রতনের ফুলকপির খেত দেখতে ভিড় করছেন। কেউ কেউ রঙিন ফুলকপি হাতে নিয়ে ছবি তুলছেন। অনেকে বাগান থেকেই কপি কিনে নিচ্ছেন।
সবজি খেত দেখতে আসা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমারও ইচ্ছা আছে রঙিন ফুলকপি চাষ করার। তাই দেখতে এসেছি। ফুলকপিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে।
একই এলাকার আরেক কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রঙিন ফুলকপি দেখতে অনেক সুন্দর, বাজারে এর চাহিদাও বেশি। আমাদের সাদা ফুলকপির তুলনায় মানিক বেশি দরে এই ফুলকপি বিক্রি করছেন।
কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, সাধারণত সাদা ফুলকপি বাজারে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে রঙিন ফুলকপি প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে অহরহ বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে নেওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন বিন্ধ আজিজ বলেন, জেলায় এই প্রথম রঙিন ফুলকপি চাষ হয়েছে, সাদা রঙের ফুলকপির খরচে রঙিন ফুলকপি চাষ করা যায়, এর বাজার মূল্যে বেশি। লাভ বেশি হওয়ায় এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ