ঢাকা, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬

গাইবান্ধায় ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ

প্রকাশনার সময়: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০২

গাইবান্ধায় সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুলকে প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পযর্ন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী শহরের ডিবি রোডের নাট্য সংস্থার সামনে গাইবান্ধা সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

পরে আন্দোলনকারীরা শহরের প্রধান সড়ক ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। মানববন্ধনে আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তর ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি সিদ্দিক আলম দয়াল। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির পলিট বুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপ, জাতীয় শ্রমিক জোটের গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ বাবু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন, আইনজীবী সালাউদ্দিন কাশেম, মানবাধিকার কর্মী দিবা বেগম, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নুরুল আলম জাহাঙ্গীর, শামীম আল সাম্য, কায়ছার প্লাবন, ওমর ফারুক রনি, বিপ্লব ইসলাম, জাভেদ হোসেন, ডেপুটি প্রধান, মিলন মন্ডল, ফারহান শেখ, মানিক সাহা, রফিক খন্দকার, ইমরান মাসুদ প্রমুখ।

জেলা প্রশাসকের বদলির দাবি তুলে বক্তারা বলেন, গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল স্থানীয় সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। নানা প্রশাসনিক কাজে তার কক্ষে দেখা করতে গেলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দর্শনার্থীরা তার নিয়োগকৃত এপিএস (সহকারি কমিশনার) এর কাছে স্লিপের মাধ্যমে সাক্ষাতের কারণ উল্লেখ করতে হয়। স্লিপ পাঠিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তার সাথে স্বাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া যায় না। সপ্তাহে একদিন গণশুনানি করা বাধ্যতামূলক থাকলেও তিনি যোগদানের পর থেকেই তা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে জেলায় শতাধিক অবৈধ ইটভাটা চললেও অজ্ঞাতনামা কারণে দুই-চারটি ছাড়া বেশিরভাগ ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জেলার সর্বত্র অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ তিনি নেননি।

জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে তার কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীও তার প্রতি মন ক্ষুন্ন। জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে সরকার ও জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই তাকে বদলি করা গাইবান্ধার মানুষের কাছে সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের নির্বাচনি তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করেন। এ সব ঘটনায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে বদলির দাবি জানিয়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার ২১ জন সাংবাদিক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আবেদন জানান। যা প্রতিবেদন আকারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া একই দাবিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিব বরাবর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের ৪২ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। তাতেও কোন কাজ হয়নি।

মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের সংবাদ প্রচার না করার ঘোষণা দেন। তারা বলেন, জেলা প্রশাসকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এছাড়া অবিলম্বে জেলা প্রশাসককে বদলি করা না হলে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুশিয়ারিও দেন তারা।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ