ঢাকা, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

পটুয়াখালী পৌর নির্বাচনে বৈধতা পেলেন ঋণ খেলাপীরা

প্রকাশনার সময়: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১০ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৫৬

আগামী ৯ মার্চ পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদের পরিবারের তিন সদস্যসহ মোট ছয় প্রার্থী। তাদের মধ্যে যাচাই বাছাইয়ে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে পটুয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দি-পটুয়াখালী চেম্বার অফ কমার্সের পরিচালক মো. এনায়েত হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়।

এছাড়াও মেয়রের স্ত্রী মার্জিয়া আক্তারের ভোটার তালিকায় অসঙ্গতির কারণে তাদের মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা সিনিয়র নির্বাচন কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসার খান আবি শাহানুর খান। যাচাই-বাছাইয়ে নির্বাচনের বৈধতা পায় বর্তমান পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ, তার আপন বড় ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, সাবেক পৌর মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শফিকুল ইসলাম ও চেম্বার অফ কমার্সের পরিচালক নাসির উদ্দিন খান।

এদিকে ঠিকাদার ব্যাবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পদ্মা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই ঋণ সময়মত পরিশোধ না করায় ও তার ভাই পৌর মেয়র মহিউদ্দিন সেই ঋণের জামিনদার থাকার জন্য তাদের ঋণখেলাপী আখ্যা দিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের নির্বাচনি মনোনয়ন বাতিল চেয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর আবেদন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

ঋণ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি সেটা ঠিক তবে বিভিন্ন কিস্তিতে সেই লোন পরিশোধ করতেছি।’ লোনের মেয়াদ শেষ হলেও কেন ঋণখেলাপি নয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘ওটা সিসি লোন এবং এখনো কিছু টাকা তারা (পদ্মা ব্যাংক) পাবে।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। অদৃশ্য কারণে খেলাপী ঋণের দুই গ্রহীতাকে প্রদান করা হয় বৈধতা। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার খান আবি শাহানুর খান জানান, যাচাই-বাছাইয়ের দিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। ঋণখেলাপীর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুধু ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নিজামুল হককে ঋণখেলাপী হিসাবে তালিকাভুক্ত করায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তাছাড়া যাচাই-বাছাইয়ের পরে কারো কোনো অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।

তার কাছে পদ্মা ব্যাংক থেকে তাহলে কি কোনো অভিযোগ করা হয়নি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের যে বাপ বাংলাদেশ ব্যাংক তারাই বলছে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী ছাড়া আর কোনো প্রার্থী ঋণখেলাপী নয়। পদ্মা ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি, আগে তারা করছে কি? পদ্মা ব্যাংকের গ্রাহক (মেয়র প্রার্থী) আবুল কালাম আজাদ ঋণক্ষেলাপী কি না এবং ওই গ্রাহকের জামিনদার (মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র) মহিউদ্দিন আহমেদ ঋণখেলাপী কি না তা আমার জানা নেই।

প্রসঙ্গত, আগামী ৯ মার্চ পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাচনে খেলাপী ঋণের দায়ে অভিযুক্ত দুই প্রার্থীসহ মেয়র পদের জন্য বর্তমানে নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন মোট ৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়াও ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪১ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৫ জন প্রার্থী। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ করা হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ