ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬

ফের বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ

প্রকাশনার সময়: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৯ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫৪

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির (এএ) মধ্যে তুমুল লড়াই-সংঘাত চলছে। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদীর ওপার থেকে থেমে থেমে আসছে বিস্ফোরণের শব্দ। এতে সীমান্ত এলাকায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে সীমান্তের এপারে কোনো বিস্ফোরণ বা গুলির শব্দ আসেনি। তবে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বদলে যায় পরিস্থিতি। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা মিয়ানমারের ভূখণ্ড থেকে আসা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে সীমান্তের এপারের মাটিও। এরপর থেকে কিছুক্ষণ পর পর থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সর্বশেষ বেলা ১২টা ৫০ মিনিটের দিকেও দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

সীমান্ত এলাকা বাসিন্দারা বলছেন, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পূর্বে মিয়ানমারের ভেতর থেকে বিস্ফোরণের এসব শব্দ আসছে।

শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা নবী হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে মিয়ানমার সীমান্ত শান্ত ছিল। কিন্তু শনিবার সকালে বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে। এতে তারা ভীত হয়ে পড়েছেন।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম জানান, নাফ নদীর পূর্ব ও দক্ষিণাংশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। যেসব স্থান থেকে গোলাগুলির আওয়াজ আসছে, সেখানে রাখাইন রাজ্যের মংডুর শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নল বন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা অবস্থিত। এসব এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব চৌকি ঘিরেই বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ।

আবদুস সালাম আরও বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশ থেকে প্রচুর গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে রাতে কোনো ধরনের শব্দ আসেনি। শনিবার সকাল থেকে কিছুক্ষণ পরপর বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্ত এলাকা।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জেরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গোলা এসে পড়ে বাংলাদেশে দুজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এছাড়া রাখাইন প্রদেশে বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির হামলায় টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে বিজিপির সদস্যসহ ৩৩০ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশে। তাদেরকে বৃহস্পতিবার মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ ও গোলাগুলির খবর তারা পেয়েছেন। সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এটি মিয়ানমারের সমস্যা। মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ