বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই ইউনিয়নের মধ্য বাইচটকীর মিজানুর রহমান ও তার পরিবার।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবের হল রুমে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে বেশ কিছু দিন যাবৎ জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ হয়। জমি নিয়ে অনেকবার সালিশ মীমাংসা হয়। সালিশে সমস্ত কাগজপত্র দেখে মীমাংসার মধ্য দিতে রোয়েদাদ প্রদান করেন। অনেকদিন যাবৎ ওই রোয়েদাদ অনুসারে আমরা সেই জমি ভোগ দখল করি। এরপর এক বছর পরে আমার বিরোধী হারুন শিকদার ইউপি চেয়ারম্যানের বরাবর একটা দরখাস্ত প্রদান করেন। তখন চেয়ারম্যান আমাদেরকে নোটিশ প্রদান করেন। আমরা নোটিশ গ্রহণ করি। চেয়ারম্যান আমার বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে সাদা রেফে স্বাক্ষর নিয়ে একতরফা মৌখিক রায় প্রদান করেন এবং বিবাদীপক্ষের দখলে আমার জমি দিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই সালিশ মানি না। কিন্তু তারা বলে এই সালিশ হয়েছে। তারপর আমরা নতুনভাবে সালিশির মাধ্যমে রোয়েদাদ চাই কিন্তু তারা দিতে অস্বীকার করে। তখন পুরনো সালিশিগন বলে যে আগের রোয়েদাদ ঠিক আছে। কিন্তু বিরোধীদল পুরানো রোয়েদাদ না মেনে তারা চেয়ারম্যানের দোহাই দিয়ে জমিতে বেড় কাটে। সেখানে আমরা বাধা দিতে গেলে আমার সাথে বিরোধীদলের ধস্তাদস্তি হয় এবং গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিরোধী দলের মো. সালাম চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দেয় এবং ওইদিন দুপুরে আমাদের বাড়িতে এক চৌকিদার নোটিশ নিয়ে হাজির হয়। আমরা চেয়ারম্যানের নিকট ন্যায় বিচার পাই না বলে আমি নোটিশ গ্রহণ করতে অস্বীকার করি। তারপর আমার বাবা সেই নোটিশ স্বাক্ষর দিয়ে গ্রহণ করে। তার কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান ও পরিষদের সকল চৌকিদার এবং বাইরের দুজন লোক নিয়ে আমাদের বাড়িদে উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান ও তার দলবলসহ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ধাওয়া করে। পরে আমাকে সন্ত্রাসী কায়দায় বেধরক মারধর করে। ওই চৌকিদারের ভেতর একজন আমাদের বিরোধী দলের রেজাউল চৌকিদার।
মিজানুর রহমান বলেন, মারামারির এক পর্যায়ে রেজাউল চৌকিদার আমার ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়। এরপর তারা প্রাণনাশের হুকমি দিয়ে চলে যায়। ২০১৩ সালে বর্তমান চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিবাদীগণসহ অন্যান্য লোকজন রাতের বেলায় আমার একটি গরু মাঠে নিয়ে জবাই করে ভাগ করে নিয়ে যায়। বিবাদী পক্ষের মাহাবুব কারিকর ও রেজাউল চৌকিদার নিজের মুখে বলে যে, তোদের গোয়াল ঘর থেকে গরু নিয়ে খেয়েছি, তোরা কি করতে পারছো? এবং আবারও হুমকি দেয় যে, তারা পুনরায় আমার গরু নিয়ে খাবে। এই সন্ত্রাসীদের গডফাদার হচ্ছে আলাউদ্দিন পল্টু চেয়ারম্যান। ২০০৭ সালের রেজাউল চৌকিদারের মা সখিনা বেগমকে দিয়ে বেড়িবাধের সূত্র ধরে বরগুনা রেফ কেস দেয়, যা মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
তিনি বলেন, রেজাউল চৌকিদার আমার আমাকে ও আমার বোন জামাইকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি ও আমার পরিবারের যদি কারো কিছু ক্ষতি হয় এর জন্য দায়ী থাকবে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু। কারণ চেয়ারম্যান এসব অপকর্মের সাথে জড়িত। এই সংবাদ সম্মেলনের পর আমার প্রাণ সংকটে পরতে পারে। আমি পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনে প্রতি জোর আবেদন করছি, আমি যাতে ন্যায় বিচার পেতে পারি এবং পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ