ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের উকিল বাড়িতে স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবাকে ভিটেছাড়া করতে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই গৃহবধূকে ঘুমের ঘরে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়ে ইট দিয়ে পিটিয়ে মাথা থেতলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ হাসপাতাল থেকে ছাড় পেয়ে আসামীদের হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়ে শহরের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
নির্যাতিত গৃহবধূ জানান, প্রথম স্ত্রী তিন সন্তানকে রেখে চলে যাওয়ার পর মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষীপুর এলাকার হাবিব উল্লাহ অসহায় হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তে হাবিব, ওই ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে আরজু আক্তারকে বিয়ে করেন। ওই সংসারে তাদের ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর হাবিব বিভিন্ন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর গৃহবধূ আরজুকে শশুর বাড়ির লোকজন বাড়িছাড়া করতে নানান ষড়যন্ত্র ও নির্যাতন শুরু করে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই নারী দুই মেয়েকে নিয়ে স্বামীর ঘরে খাটের উপর শুয়ে থাকা অবস্থায় তার সৎ ছেলে ওসামা ইবনে হাবিব (১৯) বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। দস্তাদস্তির এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়ে ইট দিয়ে উপুর্যপুরি আঘাত করে মাথা থেতলে দেয়। তাৎক্ষণিক নির্যাতিত গৃহবধূর শোরচিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সৎ ছেলে ওসামা ইবনে হাবিবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর নির্যাতিতার ভাই ইকবাল হোসেন বাদি হয়ে ১১ সেপ্টেম্বর সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ হাবিবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।
গৃহবধূ আরও জানান, কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে হাবিব ও তার স্বজনরা গৃহবধূকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। দুই মেয়ে নিয়ে স্বামীর ভিটায় উঠলে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় তিনি দুই সন্তান নিয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ভয়ে স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে ফেনী শহরের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ বিষয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ