গাজীপুরের গাছায় জমি দখল করে চারপাশে বাউন্ডারি নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে নীর নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক পুলিশ কর্মকর্তার জমি ডেভেলপার কোম্পানির বাউন্ডারির ভেতরে পড়ে। এ সময় জমির মালিক শরিফকে না জানিয়েই মাটি ফেলে ভরাট করে কোম্পানিটি। বাধা দিলে বন্ধ করে দেয় নীর কোম্পানির লোকজন ।
পুলিশ কর্মকর্তার চাচাতো ভাই হানিফ মোল্লা বলেন, আমার ভাইয়ে জমিতে কাউকে কিছু না বলে মাটি ফেলা শুরু করে তারা। আমরা বাঁধা দিলে মাটি ফেলা বন্ধ করে কোম্পানির লোকজন।
সরেজমিনে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গিলার টেক মজিবুর রহমান, জৈনা, কামাল, আলমাছ কোম্পানির ভয়ে তাদের জমি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যায়। মজিবুর রহমানের জমি নীর কোম্পানির বাউন্ডারির ভেতরে পড়ে। তারপর তিনি ভয়ে জমি বিক্রি করে তার শ্বশুর বাড়িতে বাড়ি করেছেন। জমি বিক্রির টাকা প্রায় তিন বছর পরে পেয়েছেন। আলমাছও জমি বিক্রি করে চলে যান সাইনবোর্ড এলাকায়।
জানা যায়, অল্প পরিমাণে খালের চারপাশে জমি কিনে চারদিক থেকে খাল ভরাট ও অন্যের জমি দখলের চেষ্টা করছেন নীর নামে সাইনবোর্ডধারী এ কোম্পানি। খালের পাশে কৃষিজমি ও অন্যের বাড়ি কৌশলে কিনে সাইনবোর্ড লাগিয়ে রাখছেন কোম্পানির লোকজন।
এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, আমরা গরিব, অসহায়। আমাদের জমির চারদিক থেকে বাউন্ডারি নির্মাণ করছে নীর কোম্পানি। প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর চলে নিপীড়ন-নির্যাতন ও হামলা-মামলা। এজন্য ভয়ে আমরা আপনাদের সামনে (মিডিয়ার সামনে) কথা বলি না। জমি দখলে সহযোগিতা করছেন এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি। তারা মাসিক বেতন নিয়ে দালালি করে এবং অল্প কিছু টাকা দিয়ে জমির বায়না করে। মানুষের জমি দখল করে চতুর্দিকে তারাই বাউন্ডারি দিচ্ছেন।
জমির মালিকরা তাদের জমিতে বাউন্ডারি তোলার কারণ জানতে চাইলে নীর কোম্পানির দায়িত্বে থাকা শহীদ মিয়া বলেন, আমরা আমাদের জায়গায় বাউন্ডারি নির্মাণ করতেছি। যদি কারো জমি এর ভেতরে থাকে। তাহলে কথা বলে সমাধান করছি এবং কাগজপত্র ঠিক থাকলে টাকা দিয়ে দিচ্ছি। কাগজপত্র আন-কমপ্লিট থাকলে টাকা দিতে তো একটু সময় লাগবেই।
নীর কোম্পানির বিষয়ে ৩৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মো. ইকবাল হোসেন মোল্লা বলেন, খালের পাশ ঘেষে নির্মাণ করা নীর কোম্পানির বাউন্ডারি আগামী প্রজন্মের জন্য একটা বড় হুমকি। খাল মেপে তাদের কোনো খুঁটি দেওয়া নাই। তাদের মনমতো বাউন্ডারি করতেছে। এলাকায় অল্প অল্প জমি কিনে পুরো এলাকা বাউন্ডারি নির্মাণ করতেছে তারা। এটা আমার এলাকার মানুষের জন্য বড় ধরণের ক্ষতি। কর্তৃপক্ষের কাছে আমার একটাই দাবি, মানুষের জমির ভেতরে যেনো জোর করে বাউন্ডারি না দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম জানান, এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনো অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ