ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজসিক সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে টিউলিপ

প্রকাশনার সময়: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৪ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৭

দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়। এই জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম দর্জিপাড়ায় এবারও ফুটছে বাহারি রঙের ভিনদেশি ফুল টিউলিপ। এবার রাজসিক সৌন্দর্য নিয়ে ফুটছে ২০ রংয়ের ২৫ হাজার টিউলিপ। ফুলের এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই বাগানে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

জানা গেছে, গত ৩ বছর তেঁতুলিয়ায় টিউলিপের বীজ লাগানো শুরু করেছে ক্ষুদ্র চাষিরা। পিকেএসএফ এর আর্থিক সহযোগিতায় গত ২ বছর আগে এই উপজেলায় পরীক্ষামুলকভাবে টিউলিপ চাষের উদ্যোগ নেয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও। এতে সফল হয় চাষিরা। টিউলিপ দেখতে হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন তেঁতুলিয়ায়। এ সময় ফুলও বিক্রি করেন চাষিরা।

গত ২ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার আরও বড় পরিসরে টিউলিপ চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দর্জিপাড়া এলাকার ক্ষুদ্র ২০ জন চাষি বীজ বপন শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ফুল হাসি ছড়িয়ে ফুটে উঠবে।

ইএসডিওর ডেপুটি প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর আইনুল হক জানান, এবার ২০ জন নারী উদ্যোক্তা ১ একর জমিতে টিউলিপ চাষ করছেন। এবার প্রায় ২০ রংয়ের ২৫ হাজার টিউলিপ ফুটবে তেঁতুলিয়ায়। নেদারল্যান্ডস এবং কাশ্মীরের মতোই সৌন্দর্য ছড়াবে।

তিনি আরও জানান, পল্লি সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় টিউলিপকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। দর্জিপাড়া এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে এগ্রো ট্যুরিজম। পর্যটকরা টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি তারা যাতে অর্গানিক খাবার খেয়ে গ্রামীণ পরিবেশ উৎযাপন করতে পারে এ জন্য কয়েকটি বাড়ি প্রস্তুত করা হয়েছে।

টিউলিপের চাষের জন্য বাঁশের টপ তৈরি করা হয়েছে। টিউলিপ বিক্রির জন্যও নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক একর জমিতে ২৫ হাজার চারা বা বাল্ব রোপণ করা হচ্ছে। এ বছর ১৯ প্রজাতির টিউলিপ সৌন্দর্য ছড়াবে। প্রজাতি ও রংগুলো হচ্ছে- অ্যান্টার্কটিকা (সাদা), ডেনমার্ক (কমলা ছায়া), লালিবেলা (লাল), হলুদ, ষ্ট্রং গোল্ড (হলুদ), জান্টুপিঙ্ক (গোলাপি), হোয়াইট মার্ভেল (সাদা), মিস্টিক ভ্যান ইজক (গোলাপি), হ্যাপি জেনারেশন (সাদা লাল শেড) ও গোল্ডেন টিকিট (হলুদ) টিউলিপের সৌন্দর্যে ফুটে উঠবে জাতীয় পতাকাও।

উদ্যোক্তা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, গত বছর আমরা ৮ জন নারী মিলে এ অঞ্চলে নেদারল্যান্ডের রাজকীয় টিউলিপ ফুটিয়েছিলাম। এ অঞ্চলে টিউলিপ চাষ করে আমরা যেমন সফল হয়েছিলাম তেমনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলাম। এছাড়া টিউলিপ ফুল দেখতে এ অঞ্চলে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটেছিল। আশা করছি এবারও টিউলিপের দৃষ্টি নন্দন সৌন্দর্য মুগ্ধ করবে।

উল্লেখ্য, টিউলিপ চাষ করতে সর্বোচ্চ ১৯ এবং সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। তেঁতুলিয়া শীতার্ত অঞ্চল। বেশির ভাগ সময় এই অঞ্চলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। তাই এ অঞ্চল টিউলিপ চাষের জন্য উপযোগী। শীত প্রধান অঞ্চলের টিউলিপ ফুল। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘টিউলিপা’। এটি নেদারল্যান্ডসের ফুল। যা অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুল উৎপাদনকারী উদ্ভিদ। এটি বাগানে কিংবা কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হয়। ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখার জন্য এর আবেদন অনন্য। বর্ষজীবী ও কন্দযুক্ত প্রজাতির এ গাছটি লিলিয়াসিয়ে পরিবারভুক্ত উদ্ভিদ। টিউলিপের প্রায় ১৫০ প্রজাতি এবং এদের অসংখ্য সংকর রয়েছে।

বিভিন্ন ধরণের হাইব্রিডসহ টিউলিপের সকল প্রজাতিকেই সাধারণভাবে টিউলিপ নামে ডাকা হয়। টিউলিপ মূলত বর্ষজীবী ও শীত প্রধান দেশের বসন্তকালীন ফুল হিসেবে পরিচিত।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ