ঢাকা, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬

যে শহরে ট্রেনকে সেজদা দেওয়া হয়!

প্রকাশনার সময়: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:০১ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:১৪
ছবি : সংগৃহীত

সাধারণত সেজদা বলতে আমরা কাউকে "নত" হতে বুঝি। ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা তাদের সৃষ্টিকর্তা বা প্রভুর আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য সেজদার মাধ্যমে "নত" হয়ে থাকেন। সৃষ্টিকর্তার পরিবর্তে এমন অভিবাদন ও সম্মানসূচক আচার প্রদর্শন করা হয় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনকে। আশ্চর্য্য লাগলেও সত্যি, খোদ বাংলাদেশের একটি জেলা শহরেই নিয়মিত ঘটে এমন ঘটনা। আর এতে যোগদেন অন্তত শতাধিক মানুষ।

মূলত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মেদিনীপুরের জোড়া মসজিদে প্রতিবছর একটি ওরশ শরীফ উদযাপন করা হয়। আর তাতে যোগ দিতে ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে ছুটে যান একদল ধর্মপ্রাণ। আর এই ওরশ শরীফে এক শতাব্দীর ও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলা থেকে নিয়মিত যোগদান করেন ভক্তরা। ১২৩তম এ ওরশ শরীফে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজবাড়ী রেল স্টেশন থেকে মেদিনীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে একটি বিশেষ ট্রেন।

জানা গেছে, এবারের যাত্রায় দুই হাজার ২৫১ জন ভক্ত ওরশে যোগ দেবেন।

ট্রেনটি ছাড়ার আগ মুহুর্তে সাধারণত বিশেষ এই অনুসারী বা ধর্মপ্রাণরা স্টেশনে আসেন। তাদের একাংশ হাতদিয়ে ট্রেনটি ছুঁয়ে সম্মানসূচক অভিবাদন জানান। আবার কেউ লোকোমোটিভ সালাম করে চুমু খান। কেউ কেউ আবার বগিতে কপাল ঠেকিয়ে সেজদারত অবস্থায় থাকেন।

সম্প্রতি এসব নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে সৃষ্টি হয় সমালোচনা। কেউ কেউ দাবি করেন, এমন কর্মকাণ্ড ইসলাম ধর্মের আচারকে বিকৃত করছে।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভারত থেকে আসা ২৪ বগির বিশেষ একটি ট্রেন যাত্রীদের নিয়ে রাৎ ১০টায় মেদিনীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জোড়া মসজিদে পবিত্র বার্ষিক ওরস শরিফে অংশ নিতে প্রতি বছর উভয় দেশের রেল সংশ্লিষ্টরা এই ট্রেনের ব্যবস্থা করেন। যার ফলে প্রতি বছর এই ট্রেনে মেদিনীপুরের ওরসে যেতে পারেন ভক্তরা।

আয়োজক কমিটি রাজবাড়ী আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে মেদিনীপুর জোড়া মসজিদে হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) এর বংশধর হযরত আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী (আ.) মশহুর নাম ‘মওলাপাক’ এর পবিত্র ওরশ অনুষ্ঠিত হবে। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ওরশ উৎসবকে নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষ এই ট্রেনটি দুটি দেশের সেতুবন্ধন এবং সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে ১৯০২ সাল থেকে এই ওরশকে ঘিরে এ ট্রেনটি চলাচলের ব্যবস্থা করে আসছে।

তিনি বলেন, বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানীর বংশধরদের নৈকট্য লাভ, তাদের এক নজর দেখতে ও পূণ্য লাভের আশায় প্রতিবছর এই দিনে মেদিনীপুরে যান ভক্তরা। ওই ওরশের সঙ্গে মিল রেখে একইদিন রাজবাড়ীর বড় মসজিদ খানকা শরীফে নানা আনুষ্ঠানিকতা হয়। পীরের ভক্তরা এতে যোগ দেন।

নয়াশতাব্দী/ডিএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ