ঢাকা, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে অস্ত্রসহ আরসার ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশনার সময়: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪১ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৩

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে অস্ত্রসহ মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটারিয়ন (র‌্যাব)-১৫। এসময় ২টি বিদেশি অস্ত্র, একটি দেশীয় অস্ত্র ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এরআগে, মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে উখিয়ার ২০ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উখিয়ার ৪ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসিম, ১২ নম্বর ক্যাম্পের হোসেন জোহার প্রকাশ আলী জোহার ও ৬ নম্বর ক্যাম্পের মো. আলম প্রকাশ শায়ের মুছা।

র‌্যাবের দাবি, গ্রেপ্তার আবুল হাসিম আরসার সেকেন্ড ইন কমান্ড, মো. আলম আরসা প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনির দেহরক্ষী এবং আলী জোহার আরসার পরিবহন শাখার কমান্ডার। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় গোপন সংবাদে জানায় কয়েকজন আরসা সদস্য ২০ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ঘরে অবস্থান করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে অভিযান চালায় র‌্যাব। র‌্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দিক-বিদিক কৌশলে দ্রুত পালায়নের চেষ্টাকালে তিন আরসা সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার করে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, আবুল হাসিম ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন আরসায় যোগদান করে। তার নেতৃত্বে ৪ নম্বর ক্যাম্প ও বর্ধিতাংশে আরসার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নতুন করে ঘাঁটি তৈরি করেন। পরে আবুল হাসিম সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আরসার নির্দেশনা মোতাবেক আরসার আধিপত্য বিস্তারের জন্য ক্যাম্পে সহিংসতা সৃষ্টি, মারামারি, রোহিঙ্গাদের হত্যা ও অপহরণসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল।

এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শেষে তিনি আত্মগোপনে চলে যেতেন। আবুল হাসিম ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এরশাদ, ইমাম হোসেন ও সাব মাঝি সৈয়দ আলম হত্যা, ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আব্দুল হামিদ, মো. কাসিম ও ইউনুস হত্যা এবং ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাছিম হত্যাসহ ৭টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হোসেন জোহার প্রকাশ আলী জোহার মিয়ানমারে থাকাকালীন আরসার সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিল। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। তাদের খুঁজে বের করে পুনরায় আরসায় ফেরত আনা ছিল তার মূল কাজ। ২০২২ সালে কোনারপাড়া ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের পর আরসার কমান্ডাররা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলে গেলে তিনি আরসার পরিবহন শাখার কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান। তার নামে উখিয়া থানায় ২টি মামলা রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, মো. আলম প্রকাশ শায়ের মুছা ২০১৬ সালে মিয়ানমার থাকতেই আরসায় যোগদান করেন। পরে আতাউল্লাহ জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেন। তার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে জানিয়েছেন র‌্যাব অধিনায়ক।

নয়াশতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ