ঢাকা, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬

তাড়াশে ৩শ বছরের ঐতিহ্যবাহী দই মেলা শুরু

প্রকাশনার সময়: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৩১ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৪৭

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলা শুরু হয়েছে। মেলাটির সূচনা প্রায় ৩০০ বছর আগে। এ মেলা‌কে ঘিরে এলাকায় উৎস‌বের আমেজ বিরাজ করছে।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়া‌রি) দিনব্যাপী দইয়ের মেলা শুরু হয়।

এই দইয়ের মেলায় না‌মি-দামি ঘোষরা তা‌দের দই নি‌য়ে আসেন। এদিন সকাল থেকে শুরু হওয়া দিনব্যাপী এই মেলায় দইয়ের পাশাপাশি, ঝুরি, মুড়কি, চিড়া, মু‌ড়ি, বাতাসা, কদমাসহ নানা ধর‌নের রসনা বিলাসী খাবার বেচাকেনা হয়। ঐতিহ্যবাহী তাড়াশের এই দই মেলা নিয়ে রয়েছে নানা গল্প কাহিনী।

তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজত ঘোষ জানান, তাড়াশের এই দই মেলা প্রায় ৩০০ বছ‌রের পুরাতন এবং এই মেলার প্রথম প্রচলন করেছিলেন, তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর।স্থানীয় জনশ্রুতি আছে, জমিদার নিজেও দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নও করা হ‌তো এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই মি‌ষ্টি দি‌য়ে। সে থেকেই জমিদার বাড়ির সামনে রসিক রায় মন্দিরের পাশে (বর্তমান তাড়াশ হেলিপ্যাড মাঠ) সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে দই মেলা বসতে শুরু করে। সে সময় মেলা চল‌তো তিন দিন ধ‌রে। তখন থে‌কেই প্রতি বছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে স্বরস্বতী পূজার দিন শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলার শুরু হয়।

জমিদারের পক্ষ থেকে উপঢৌকনও দেওয়া হ‌তো মেলায় আগত সবচেয়ে ভালো সুস্বাদু দই প্রস্তুত কারক ঘোষকে। বর্তমা‌নে উপঢৌকন এর রেওয়াজ না থাক‌লেও মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতেই উৎসব আমেজে দই মেলা বসার বাৎসরিক রেওয়াজ আজও চলমান। মেলায় আসা নানা অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- বগুড়ার দই, ক্ষীরসা দই, শাহী দই, চান্দাইকোনার দই, শেরপুরের দই, টক দই, শ্রীপুরী দই এ রকম হরেক নামের দই।

সাইদ, উত্তম, উজ্জলসহ একাধিক দই প্রস্ততকারির সাথে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের দাম সবই বে‌ড়ে‌ছে, তাই দইয়ের দামও ‌কিছুটা বেড়েছে। য‌দিও মেলা একদিনের ত‌বে চাহিদা থাকার কারণে মেলায় আসা কোনো দই'ই অবিক্রিত থাকে না।

অপরদিকে মেলায় দই কিনতে আসা সংগ্রাম, মুক্তা, আক্কাসসহ একা‌ধিক ক্রেতা জানান, এই মেলা থে‌কে আমরা প্রতিবছরই দই কি‌নি। এমেলায় আগত দই স্বা‌দে ও গুণে অতুল‌নীয়। ত‌বে বর্তমানে সড়া বা খুঁটির যে দই বি‌ক্রি হয় সেখানে অর্ধেক পরিমাণ দই বাকি অর্ধেক দইয়ের পাত্রের ওজন, এতে করে ভোক্তা হিসা‌বে আমা‌দের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ