শীতের রিক্ততা মুছে প্রকৃতিতে নেমে এসেছে ফাগুনের শিহরিত স্পর্শ। বাতাসে বইছে ফুলের মৌ-মৌ গন্ধ মেশানো অবাক ছোঁয়া। শিমুল-পলাশ ঝরা ফুলের গন্ধে জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন। তাই ফাগুন হাওয়ায় হৃদয়ে বয়ে যাচ্ছে অনাবিল সুর। ঠিক এই দিনেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও আজ। তাই পর্বতসম ব্যস্ততা উপেক্ষা করে ভালোবাসার পালতোলা নায়ে ভাসছে সবাই।
ভালোবাসার উৎসবে মুখর যুবা-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষ। বিশেষ এই দিনটিতে প্রেমিক-প্রেমিকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভালোবাসার জয়গানে সুর মিলাচ্ছে স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধুবীসহ সকলে। প্রিয় মানুষটিকে একগুচ্ছ ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার জানান দিতে ফুলের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নানান বয়সীরা।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহর ঘুরে দেখা মেলে বাহারি ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
দোকানগুলোতে ভিড়ের মধ্যে অনেকটা লজ্জারাঙা হয়ে ফুল সংগ্রহ করতে দেখা যায় তরুণ-তরুণীদের। তবে ভালোবাসার পরশ নিয়ে হাসিমুখে প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য ফুলের তোড়া কিনছেন প্রেমিক পুরুষরা। দোকানিরা বলছেন, মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে প্রেম বিনিময়ের প্রধান অনুষঙ্গ (ফুল) বিক্রির ধুম পড়েছে তাদের দোকানগুলোতে।
পৌর শহরের মহিলা কলেজ সংলগ্ন মাইনুল ইসলামের দোকানে কথা হয় কলেজ শিক্ষার্থী অলির সাথে। তিনি জানান, দুই বছরের রিলিশনে রয়েছেন তার প্রিয়তমার সঙ্গে। আজ ভালোবাসা দিবসে একটি লাল গোলাপের তোড়া নিয়েছেন প্রিয়তমাকে উপহার দেওয়ার জন্য।
মনোহরি পট্রির গালিবের দোকানে ফুল নিতে আসা মাসুদ জানান, দীর্ঘ ১৯ বছরের সংসার জীবন এই কপত-কপতির। আজ বিশেষ এই দিনে জীবন সাথীকে ফুলেল শুভেচ্ছায় জানাতে চান। আজও আগের মতো করে শুধু তাকেই মনের গহিনে রেখেছেন তিনি।
ফুল দোকানি মাইনুল জানান, তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকার ফুল সংগ্রহ করেছেন। তবে তার দোকানে বেশি বিক্রি হচ্ছে লিলিয়াম, টিউলিপ, গ্যালোডিলাক্স, জারবোরা, ঝিপসি, চন্দ্রমল্লিকা, বেলজিয়াম স্টার, গাঁদাসহ ৬জাতের গোলাপ। এদিন সকাল পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে তার। আবার অনেকেই ফোন দিয়ে গোপনে অর্ডার করছেন ফুল নেয়ার জন্য।
এদিকে এই দিনটি উদযাপনে কুয়াকাটা সৈকত জুড়ে ভিড় জমিয়েছেন দুর-দুরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা। মনের মানুষের হাত ধরে সৈকতের বালিয়ারীতে ঘুরে ঘুরে বলছেন মনের যত কথা। কেউ কেউ এসছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। শুধু তরুণরাই নয়, ফাগুনের ছোয়াঁয় উচ্ছ্বাসে মেতেছেন বয়ষ্করাসহ শিশুরাও। আর সকলেই বলছেন, হৃদয় দিয়ে ভালোবাসার মানুষকে আপন করে কাছে পাওয়ার আকুলতা বাড়িয়ে দিয়েছে আজকের এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ