গাজীপুরে প্রেমে বাধা দেওয়ায় নুসরাত জাহান মিম (১২) নামে ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি পরিবারের। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সিটি করপোরেশনের ৩৮নং ওয়ার্ডের একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, মৃত স্কুলশিক্ষার্থী মিম শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার ডাহিরপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মাসুদ রানার মেয়ে। বর্তমানে সে মা আকলিমা আক্তার সুমির সঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাইলকুরে আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তির ভাড়াবাড়িতে থাকতো এবং গাছা থানাধীন ইউনিক একাডেমিক স্কুলে পড়াশোনা করতো।
সম্প্রতি তাদের ঘর থেকে চার ভরি স্বর্ণ এবং ছয় লাখ পঞ্চাশ হাজার (৬,৫০০০০/-) টাকা পাওয়া যাচ্ছিলো না। বিষয়টি নিয়ে মা আকলিমা আক্তার মিমকে চাপ দিলে, এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে যে, তার প্রেমিক মাসুদকে (ফোন নম্বর- ০১৭৫৯-৮২১৪০১) দিয়েছে।
পরে সে তার মাকে এই বলে হুমকি দেয় যে, তুমি যেহেতু বিষয়টি আব্বাকে জানায়ছো, এর ফল পাইবা। এই কথা বলে মিম তার রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা কয়েকবার তাকে খাওয়ার জন্য ডাকে। কিন্তু খাবে না বলে জানায় সে। পরবর্তীতে শনিবার সকাল ১১টার দিকে মা আকলিমা আক্তার তাকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু সে দরজা না খোলায়, দরজার নিচ দিয়ে মিমের পা ঝুলে থাকতে দেখতে পান। তখন তার মা আশেপাশের লোকজনকে ডেকে আনেন।
বিষয়টি গাছা থানায় জানালে, এসআই সুমন খান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দরজা ভেঙে রুমে প্রবেশ করে মিমকে সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করেন। পাশাপাশি সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহআলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কয়েকজন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহে গেলে, নিউজ করতে নিষেধ করেন শিক্ষার্থীর মামি ও অলিউল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। নিউজ না করার কারণ জানতে চাইলে, মৃতের মামা সৌদি প্রবাসী আল আমিন গাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক মুক্ত খবরের রিপোর্টার হামিদ খানকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ বিষয়ে গাছা মেট্রো থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন হামিদ খান।
অন্যদিকে, বিষয়টি পরিবার ও পুলিশ আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিলেও, এলাকার অনেকেই মনে করছেন এটি আত্মহত্যা নয়, পেছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে।
শিক্ষার্থীর মামি দাবি করেন, তার মোবাইল ফোন দিয়েই মিম সবজি বিক্রেতা মাসুদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। মিমের মামা আল আমিন সৌদি প্রবাসী হওয়ায় অলিউল্লাহ নামে তার এক বন্ধু তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করেন। এই আসা-যাওয়া মাঝেই তাদের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ