পিরোজপুরের কাউখালীতে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তুলে ধরছেন নিজের পরিচয়। হাট-বাজারে গিয়ে কুশল বিনিময় করে ভোটারদের সাথে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা।
এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার ধাপে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যার প্রথমটি হবে আগামী ৪ মে। এরপর ১১ মে দ্বিতীয়, ১৮ মে তৃতীয় ও ২৫ মে চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে। তফসিল ঘোষণা না হলেও কাউখালী উপজেলার সব ইউনিয়নে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়ে চড়ে বসেছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন উপজেলার ৮ জন সম্ভাব্য প্রার্থী।
এরমধ্যে তারা ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে দোয়া চাইছেন। এলাকার ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের আগাম প্রচারে সরব হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ।
অনেকেই আবার ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশ শুরু করছেন। নির্বাচনের সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য দোয়া চাইছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদে যারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তারা হলেন- কাউখালী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিঞা মনু, কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস শহীদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ মিল্টন, কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মামুন হোসাইন বাবলু জোমাদ্দার, সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ।
এ ছাড়া দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও দুই বারের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আহসান কবীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তারা হলেন- কাউখালী উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মৃদুল আহম্মেদ সুমন, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও কাউখালী পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবু বিপুল বরণ ঘোষ, সাংবাদিক হাফেজ মাছুম বিল্লাহ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (জেপি) কাউখালী উপজেলা শাখার সভাপতি মো. শামীম হোসেন।
সম্ভাব্য মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তারা হলেন- উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার হাদিয়া, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি শাহিদা হক, উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা ইয়াসমিন পপি, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক কাশমীরী পারভীন ঝুমুর।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কে ভোটারদের মতামত জানতে চাইলে, তারা বলছেন- নির্বাচন এলেই কেবল নেতাদের পা পড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনপদে। যতোই নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে ততোই প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। শুধু নির্বাচন এলেই ভোটারদের কদর বাড়ে। যতোদিন নির্বাচন থাকে ততোদনি তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে গোটা অঞ্চল। নির্বাচন চলে গেলে এসব নেতারা আর আমাদের খোজঁ-খবর রাখেন না। তবে এবারের নির্বাচন হবে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নির্বাচন। কারণ দলীয় মনোনয়ন না হলে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ব্যাপারে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে কাউখালী উপজেলা পরিষদ গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৬২২৭১ জন। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৩১০১২ এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ৩১২৫৮।
নয়া শতাব্দী/টিএ/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ