নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সাইনবোর্ড তুষারধারা এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন ঠিকাদার ব্যবসায়ী মোহন। একই ভবনের পাশের ফ্লাটে থাকতেন মোহনের বন্ধুও তার স্ত্রী-সন্তানরা। পরিবারসহ দুই বন্ধুর জীবন ভালোই কাটছিল। কিন্তু দুই বন্ধুর মাঝে থাকা একটি আর্থিক লেনদেন একটা বড় বিপত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেই বন্ধুর কাছে মোটা অংকের টাকা পেতেন মোহন। পাওনা টাকার দাবি করলে টাকা দিতে না পেরে একপর্যায়ে ফ্ল্যাটে স্ত্রী-সন্তানকে রেখে পালিয়ে যান তার বন্ধু। পরে বন্ধুর স্ত্রী সাথী আক্তারকে পাওনা টাকার চাপ দেন মোহন। আর সেই টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রী সাথী আক্তারকে বিয়ে করে ফেলেন মোহন।
কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ না। মৌখিক ও কাবিননামাসহ কাজী ডেকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করা হয়। অর্থাৎ বন্ধুর স্ত্রী সাথী আক্তার মোহনের দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে যান। সেই স্ত্রীকে নিয়ে মোহন আনলেন এক গুরুতর অভিযোগ, নিতে হল জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সহায়তা।
মোহনের অভিযোগ, ভরণপোষণ না দেওয়ায় স্বামীকে পিটিয়ে শীতের রাতে কচু খেতের পানিতে নামিয়ে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন স্ত্রী সাথী আক্তার। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহযোগিতায় সেখান থেকে উদ্ধার পান মোহন। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ফতুল্লার সাইনবোর্ড তুষারধারা এলাকায় ঘটে বিচিত্র এ ঘটনা।
মোহন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাথীকে প্রথমে মৌখিকভাবে বিয়ে করি। পরে পাঁচ লাখ টাকা কাবিন দিয়ে কাজির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করি। বিয়ের পর থেকে তার নিয়মিত ভরণপোষণ দিয়ে আসছি। কয়েক দিন আগেও চালের বস্তা কিনে দিয়েছি। বাজারও করে দিয়েছি। কিন্তু আমার বিয়ে করা স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও আমাকে ঘরে থাকতে দেয় না সাথী। কারণ সাথীর সঙ্গে একাধিক পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে, আমার কাছে এ সবের প্রমাণও আছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই সাথী আমাকে মারধর করতে চায়, ঘর থেকে বের করে দেয়।’
ঘটনার দিনের বিষয়ে মোহন বলেন, ‘শনিবার রাত প্রায় ১২টার দিকে সাথীর ফ্ল্যাটে গিয়ে দরজা ধাক্কা দিলে কেউ শব্দ করেনি। কিন্তু ঘরে লোকজন থাকার শব্দ পাই। এতে জোরে দরজা ধাক্কা দিলে সাথী গালাগাল দেয় আমাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন তিনজনকে হাতে রড ও লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করার জন্য পাঠায় সাথী। আমি দৌড় দিলে তারা পিছু নেয় এবং মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে সড়কের পাশে কচুখেতের ভেতর ঢুকে পড়ি। ওই খেতে বুকসমান ঠান্ডা পানি ছিল। তারা আমাকে পানিতে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ আসার পর তারা পালিয়ে যায়।’
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মোহনকে ভেজা অবস্থায় কচুখেতের সামনে পাওয়া যায়। তাকে চিকিৎসা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নয়াশতাব্দী/ডিএ/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ