২০ শে সেপ্টম্বর তালায় ১১ ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দিন যতই এগিয়ে আসছে ক্রমেই গরম হচ্ছে ভোটের মাঠ। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে প্রার্থীরা ও তার সমার্থকরা করছেন মিছিল, মিনি শোডাউন,পথসভা। তবে কিছু ইউনিয়নের প্রার্থীরা তাদের অবস্থান জানাতে করছে লাঠি বাজি ও দিচ্ছেন ভোটারদের হুমকি ধামকি। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের কড়া নজদারির কারণে কয়েকটি ইউনিয়ন ছাড়া ভোটের মাঠে রয়েছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড।
নির্বাচনী অফিস সুত্রে জানা যায়, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ১১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৩, সাধারণ সদস্য পদে ৪৬১ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২০ শে সেপ্টম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তালা উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে ধানদিয়ায় ৪ জন, নগরঘাটা ৫ জন, সরুলিয়া ৮ জন, তেঁতুলিয়া ৪ জন, তালা সদর ৩ জন, ইসলামকাটি ৪ জন, মাগুরা ৫, খলিশখালী ৩ জন, খেশরা ২, জালালপুর ২ এবং খলিলনগর ইউনিয়নে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন।
তবে নগরখাটা, খলিষখালী, তালা সদর, খলিলনগর, জালালপুর ও খেশরা ইউপিতে প্রার্থীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে সরেজমিনে পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে উপজেলার তালা সদর, খলিলনগর, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে ইভিএম ম্যাশিনে ভোট হওয়ার কারণে অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্য আছেন।
১১ টি ইউনিয়নের মধ্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে ১নং ধানদিয়ার ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র জাহাঙ্গীর আলম(টেবিল ফ্যান), মো. দিদারুল ইসলাম (মটর সাইকেল), মো: হামিজ উদ্দীন গাজী (আনারস)।
২নং নগরঘাটা ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী কামরুজ্জামান লিপু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) মনোনীত মিলন কুমার ঘোষাল (মশাল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মো. আজিজুর রহমান (হাত পাখা), স্বতন্ত্র এসএম আলতাফ হোসেন (মটর সাইকেল), মো জাহাঙ্গীর হোসেন(আনারস)।৩নং সরুলিয়া ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী মতিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত শেখ শাহাদাত হোসেন (হাতপাখা), স্বতন্ত্র আ.রব(আনারস), আমিনুজ্জমান(চশমা), জাহাঙ্গীর আলম(ঘোড়া), আ.হাই(মটর সাইকেল), শাহ আলম(টেবিল ফ্যান), শেখ জহরুল হক(রজনীগন্ধা)।
৫নং তেতুলিয়া ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, স্বতন্ত্র মোস্তাফিজুর রহমান (আনারস), শেখ আফতাব উদ্দীন(চশমা)।
৬নং তালা সদর ইউনিয়নের ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম (লাঙ্গল), আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী সরদার জাকির হোসেন, স্বতন্ত্র মশিয়ার রহমান(আনারস) ।
৭নং ইসলামকার্টি ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র সেন, স্বতন্ত্র মো: গোলাম ফারুক (চশমা), মো: জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), আব্দুল আজিজ(মটর সাইকেল)।
৮নং মাগুরা ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমার্থিত নৌকার প্রার্থী গনেষ চন্দ্র দেবনাথ, ওয়াকর্স পার্টি মনোনীত হিরন্ময় মন্ডল (হাতুড়ি), স্বতন্ত্র এসএম আইয়ুব আলী (মটর সাইকেল), জিএম ইমান আলী(চশমা), সুনীল কুমার দাশ (আনারস)।
৯নং খলিষখালী ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী সাংবাদিক মোজাফার রহমান, ওয়াকর্স পার্টি মোল্লা সাবির হোসেন(হাতুড়ি), স্বতন্ত্র গাজী রেজাউল করিম(আনারস)।
১০নং খেশরা ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী প্রভাষক রাজিব হোসেন, আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ কামরুল ইসলাম (আনারস)।
১১নং জালালপুর ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন স্বতন্ত্র পরপর দুবারের চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু, আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী রবিউল ইসলাম মুক্তি।
১২নং খলিলনগর ইউনিয়নে প্রচারনা করছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু, স্বতন্ত্র এসএম আজিজুর রহমান রাজু( আনারস), গোলাম রসুল(চশমা)।
ইউনিয়ন ভিত্তিক ভোটার সংখ্যা ধানদিয়া ১৭২৩৭ জন, নগরঘাটা ১৫২৫৩ জন, সরুলিয়া ৩০০৫৫ জন, তেঁতুলিয়া ২০৭৫৩ জন, তালা সদর ২৬৫৮৩ জন, ইসলামকাটী ১৬৭৩৯ জন, মাগুরা ১৭৩৫৫ জন, খলিষখালি ২১০৯৫ জন, খেশরা ২২০৬২ জন, জালালপুর ১৯২২১ জন ও খলিলনগর ২৪৪৭১ জন ভোটার সংখ্যা।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমি সব সময় কাজ করে যাব। তাই আগামী ২০ সেপ্টেম্বর আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।’
খেশরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রভাষক রাজিব হোসেন রাজু বলেন, ‘নৌকাকে ভোট দিয়ে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
তালা সদর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম জানান, তালা ইউনিয়নে ২০১১-১৬ সাল পর্যন্ত আমি চেয়ারম্যান থাকাকালে ছিল উন্নয়নের বছর। তালার জলাবদ্ধতা দূর, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, ব্রিজ কালভার্টের উন্নয়ন ও সরকারি সুবিধা মানুষ ফ্রি পেয়েছে। কখনো কোন মানুষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করিনি। পরবর্তী সময়কালে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে টাকা উত্তোলন, জেয়ালা নলতার লুৎফার নিকারীকে খুন, তালা থানার এসআই, পুলিশ কন্সটেবলকে মারপিট, সকল সরকারি সুবিধায় অনৈতিক সুবিধাগ্রহণসহ নানা দুর্নীতি অনিয়ম করে মানুষকে অতিষ্ট করে তুলেছেন। ২০ সেপ্টেম্বর জনগণ ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দিবে ইনশআল্লাহ।
জালালপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মফিদুল হক লিটু বলেন, ‘আমি টানা পরপর দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। জনগণ আবারও আমাকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী।’ ভোটারদের তিনি আনারস প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের কাছে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।’
উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাহুল রায় বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ