শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকায় ২০-২৫ বন্যহাতির একটি পাল তাণ্ডব চালিয়ে খ্রিষ্টান মিশন ও বসতবাড়ি তছনছ করেছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার বারোমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্ম পল্লী ও ডালুকোনা এলাকায় বসতবাড়িতে রাতব্যাপী তাণ্ডব চালায় বন্যহাতির পালটি।
বন বিভাগ, গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, খাদ্যের সন্ধানে ২০-২৫টি বন্যহাতির একটি পাল বুধবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে উপজেলার বারোমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্ম পল্লীতে ঢুকে সেখানকার কলাগাছ খেয়ে সাবাড় করে দেয়। তাণ্ডব থেকে বাঁচতে ধর্মপল্লীর লোকজন ডাকচিৎকার করে, পটকাফুটিয়ে ও মশাল জ্বালিয়ে হাতিগুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা করে। পরে হাতির পালটি শেষ রাতের দিকে পাশের ডালুকোনা এলাকায় গিয়ে তাণ্ডব শুরু করে। এসময় ওই গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মিতালি ঘাগড়ার ঘরে ঢুকে সেখানে রাখা বস্তাভর্তি চাল খেয়ে সাবাড় করে হাতির পাল।
ক্ষতিগ্রস্ত মিতালি ঘাগড়া বলেন, ক্ষুধার্ত হাতির পাল আইছিল, লোকজন বাঁধা দিতে গেলে প্রাণে মেরে ফেলতে তেড়ে আসে হাতি। পরে গ্রামবাসী মিলে ডাকচিৎকার করে ও পটকা ফুটিয়ে হাতির পালকে তাড়ানোর চেষ্টা করে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে হাতিগুলো চলে যায়।
বারোমারি এলাকার বাসিন্দা লিটন ডেবিট বলেন, এক সময় গারো পাহাডের প্রাকৃতিক বনে লতা আর পাহাড়ি ফলমূলে ভরপুর ছিল। ওসব লতা আর ফলমূল খেয়ে হাতি জীবন ধারণ করতো। এখন সেই প্রাকৃতিক বন কেটে সামাজিক বনায়ন করা হয়েছে। তাই পাহাড়ে পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে হাতির পাল খাবারের সন্ধানে পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়িতে তাণ্ডব চালায়।
বারোমারী খ্রিষ্টধর্ম পল্লীর পালপুরোহিত রেভারেন্ড ফাদার তরুণ বনোয়ারী বলেন, বুধবার মাঝরাতে বন্যহাতির পাল মিশন এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালায়। মূলত, বনে খাবার না থাকায় ক্ষুধার্ত হাতির পাল মাঝে মধ্যেই মিশন এলাকায় ঢুকে পড়ছে। বনে খাবারের ব্যবস্থা করা হলে, হাতিও আর লোকালয়ে আসতো না।
এ বাপারে ময়মনসিংহ বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি খবর নিয়েছি। বর্তমানে হাতির পালটি সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান করছে।
এলাকার মানুষকে সচেতন করতে, তাদের জানমাল রক্ষা করতে বন বিভাগ ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ