টাঙ্গাইলের বাসাইলে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত জিজান হাসান দীপ্ত (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীর ৯ দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত জিজান হাসান দীপ্ত সখীপুর উপজেলার চাকদহ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মল্লিকের ছেলে। তিনি ঢাকায় বিজিবি পিলখানায় অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে ২০২৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর সে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
নিহতের চাচাতো মামা বাসাইল পৌরসভার কাউন্সিলর প্রিন্স মাহমুদ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, জিজান হাসান দীপ্ত গত ২৩ জানুয়ারি বাসাইল দক্ষিণপাড়া এলাকায় তার নানা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরে ২৪ জানুয়ারি দুপুরে সমবয়সী বাসাইল উত্তরপাড়ার নাঈম ও সজল খানের সঙ্গে বাসাইল বাজারে বেড়াতে যান তিনি।
সেখান থেকে নাঈমকে শাকিল নামে স্থানীয় এক কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান বাসাইল বাজারের একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। এ সময় সেখানে জিজান এবং সজলও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর সন্ধ্যায় আবার তারা তিনজনে মিলে বাসাইল বাজারের দিকে যাওয়ার সময় বাসাইল মনি ক্লিনিকের সামনের মোড়ে পৌঁছালে, কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান শাকিলের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় নাঈম ও সজল প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে জিজানকে ধরে ফেলে ধারালো দা, স্ট্যাম্প, লোহার পাইপ, মোটরসাইকেলের চেইন, প্রিমিয়াম ঝালাইযুক্ত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান শাকিলসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে জিজান হাসান দীপ্তকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে ঢাকায় হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন থেকে তাকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
পরে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে সেখানে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, সকালে জিজান হাসান দীপ্তর মা ও বাবা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় গত ২৭ জানুয়ারি শিক্ষার্থী জিজান হাসান দীপ্তর মা বাদি হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
নয়া শতাব্দী/এমএইচ/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ