চাঁদপুরের কচুয়ায় রাবেয়া বেগম (৩২) নামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বিতারা ইউনিয়নের বাইছারা সিকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটনাকে আত্মহত্যা বললেও, রাবেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।

নিহত রাবেয়া বেগম উপজেলার খিলমেহের গ্রামের শেকান্দর মিয়ার মেয়ে। প্রায় ১৪ বছর আগে বাইছারা সিকদার বাড়িতে প্রবাসী এরশাদ উল্লার সঙ্গে বিবাহ হয় তার। সাংসরিক জীবনে তাদের ঘরে রাকিব হোসেন (১০), আবু রায়হান (৭) নামের দুই ছেলে ও সুমাইয়া আক্তার (৪) নামে এক মেয়ে রয়েছে।

নিহতের বাবা শেকান্দর মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকেই মেয়ের জামাই এরশাদ প্রবাসে কর্মরত। আমার মেয়ের সঙ্গে জামাই এরশাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। পারিবারিকভাবে তারা স্বচ্ছল থাকায় জামাইয়ের বাবা, ভাই-বোনেরা টাকার জন্য বিভিন্ন সময় আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। এই কথাগুলো রাবেয়া প্রায়ই আমাকে বলতো।

তার দাবি, মেয়ের শ্বশুর রোস্তম আলী সিকদার, দেবর ফরিদ সিকদার এবং ভাসুর জামাল ও কামাল সিকদার আর বোনরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আমার মেয়েকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে।

শেকান্দর মিয়া বলেন, এর আগেও রাবেয়ার ভাসুর, দেবর ও শ্বশুর মিলে আমার মেয়েকে নির্যাতন করেছে। বুধবার রাত দেড়টার দিকে মেয়ের ভাসুর কামাল সিকদার আমাকে ফোন দিয়ে বলে, আমার মেয়ে রাবেয়া আত্মহত্যা করেছে। শোনার পরেই রাতে ছুটে আসি মেয়ের বাড়িতে। এ কথা বলেই প্রতিবেদকের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শেকান্দর মিয়া।

এদিকে নিহতের শ্বশুর রোস্তম আলী সিকদার বলেন, কি কারণে রাবেয়া আত্মহত্যা করেছে- এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে নিহতের স্বামী এরশাদের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি উপস্থিত সবার সামনে তার স্ত্রী রাবেয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন। একইসঙ্গে বলেন, আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই।

এদিকে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে, আজ কচুয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা- ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

নয়া শতাব্দী/এনএস