শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

সাবেক স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে এসে একি করলেন যুবক!

প্রকাশনার সময়: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৫১ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৫৬
ঘটনাস্থল এলাকার একটি দৃশ্য। ছবি- নয়া শতাব্দী

মীম আক্তার (২২) নামে তালাক দেওয়া স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন নাঈম (২৫) নামের যুবক। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় ক্ষোভের বশে ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে হত্যা করে, নিজেও আত্মহত্যা করেন তিনি। নানাভাবে চেষ্টা করেও তাদের থামাতে পারেনি প্রতিবেশীরা।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়ার কাইচাবাড়ীর গফুর মন্ডলের মালিকানাধীন দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয় পুলিশ ও র‍্যাবের বিভিন্ন ইউনিট।

নিহত মীম আক্তার নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার খোকশাবাড়ি গ্রামের মংলা সরদারের মেয়ে। তিনি স্থানীয় ফোর-এ ইয়ার্ন ডাইং লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার স্বামী নিহত নাঈম নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার মতিমপুর গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে।

পরিবার ও প্রতিবেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে করেন তারা। তবে দাম্পত্য জীবনে দুজনের বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের দুই বছরের মাথায় সংসার ভেঙে যায় তাদের। এরপর থেকে মীম আক্তার নাতাশা নামে তার এক বান্ধবীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে পোশাক কারখানায় কাজ করে আসছিলেন। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাসায় আসলে, তার পিছু নিয়ে বাসায় উপস্থিত হন স্বামী নাঈম। ‘এক মিনিট কথা আছে’ বলে ঘরে ঢুকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।

নিহত মীমের রুমমেট নাতাশা বলেন, ‘মীম আমার বান্ধবী। আমরা অনেকদিন ধরেই একসঙ্গে থাকছিলাম। আজ (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে লাঞ্চের বিরতিতে বাসায় আসলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই নাঈমও বাসায় আসে। এসেই আমাকে বলে আপনি একটু বাইরে যান, ওর সঙ্গে আমার কথা আছে। আমি এতে আপত্তি করলে, নাঈম আমাকে জোর করে রুম থেকে বের করে দেন। আমার সন্দেহ হলে আবারও রুমে যাই এবং দেখি নাঈমের হাতে ছুরি। তারা দুজনে কথা কাটাকাটি করছে। আমাকে দেখেই ছুরি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসেন। তখন আমি দৌড়ে নিচে নেমে এসে বাসার লোকজনকে জানাই। সবাই মিলে দোতলায় গিয়ে দেখি, দরজায় ছিটকানি লাগানো এবং ভেতরে কোনো সাড়াশব্দ নেই। তখন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি, মীম মেঝেতে পড়ে আছে, আর নাঈম ফাঁস দিয়ে ফ্যানে ঝুলে আছে।’

নিহত মীমের ভাই খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমার বোনের সঙ্গে নাঈম প্রেম করে বিয়ে করে। আমরা মেনেও নিই। ২ বছর সংসার করে, একবছর আগে আমার বোন নাঈমকে ডিভোর্স দেয়। কিছুদিন আগে নাঈমের বাবা মারা যায়। এরমধ্যে নাঈম আমাদের কাছে তার আগের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে আমার বোনের সঙ্গে ফের বিয়ে করে সংসার করবে বলে জানায়। এরমধ্যে আজ এ ঘটনা ঘটল।’

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশের সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিকেল ৩টার পরে এই হত্যাকাণ্ডের খবর পাই। খবর পেয়ে আমিসহ আমাদের টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে চলে আসি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তদন্ত শেষে বলা যাবে এই হত্যাকান্ডের আসল রহস্য।’

র‍্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, ‘সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পরে নিজেও আত্মহত্যা করেছে, প্রাথমিকভাবে আমরা এটুকুই জানতে পেরেছি। এখনো পর্যন্ত বিষয়টি পরিষ্কার না। আমরা তদন্ত করছি।’

নয়াশতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ