ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

প্রস্তুত হচ্ছে ইজতেমা ময়দান, প্রথম পর্ব শুরু ২ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশনার সময়: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৬ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫২

‘কহর দরিয়া’ খ্যাত টঙ্গীর তুরাগ তীরেই অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমার ময়দান। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এই ময়দানেই থেকে শুরু হচ্ছে ইজতেমার প্রথম পর্ব। এ উপলক্ষে তুরাগ তীরে চলছে ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতের কাজ।

আয়োজক ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর টঙ্গীর তুরাগ তীরে তিন দিন করে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয় তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা। এখানে অংশ নেন দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি; শোনেন দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বিদের বয়ান। ইতোমধ্যে বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে মাঠ প্রস্তুতির কাজ চলছে। স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা। কেউ কেউ শামিয়ানা টাঙাচ্ছেন, কেউ বিদ্যুতের কাজ করছেন, কেউ আবার বাথরুম পরিষ্কার, কেউ ময়দান পরিষ্কার, তো আবার কেউ খুঁটি পুঁতছেন। এভাবেই তুরাগ তীরে প্রস্তুত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার ময়দান।

এ পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার ময়দান প্রস্তুতির কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই বাকি কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানান আয়োজকরা।

দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আগমনে মুখরিত হয় টঙ্গীর তুরাগ তীর। বিশ্ব ইজতেমায় নিজ নিজ খিত্তায় চলে রান্নাবান্নার কাজ। নিজ নিজ দায়িত্বে এখানেই থাকা-খাওয়া ও গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সেরে নেন মুসল্লিরা। এখানে শুয়ে-বসেই বয়ান শোনেন বিভিন্ন বয়সের দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা। জামাতবদ্ধ হয়ে সালাত আদায় ও জিকির করেন লাখ লাখ মানুষ।

এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি। ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্বের ন্যায় একইভাবে ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা।

ইজতেমা উপলক্ষে লাখ লাখ মুসল্লির নিরাপত্তায় র‌্যাব, পুলিশ, আনসারসহ কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করেন। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় পুরো ইজতেমার ময়দান।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুরব্বি মুফতি জহির ইবনে মুসল্লি নয়া শতাব্দীকে বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি। ইতোমধ্যেই বিশ্ব ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতির কাজ প্রায় সম্পন্ন। তবে সামিয়ানা টাঙানোর চট সংকট হওয়ার কারণে অনেক জায়গায় এখনো ফাঁকা রয়েছে। ইজতেমায় প্রথম পর্বে মুসল্লিদের উপস্থিতি অনেক বেশি হয়। ফলে ময়দানে জায়গা সংকুলান হয় না। মুসল্লিদের সমস্যা হয়। জায়গা না পেয়ে অনেক মুসল্লি চলে যান। তাই এবার দিয়াবাড়িতে আরেকটি ময়দান প্রস্তুত করা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা নিষেধ করা হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলে আসছি, আমাদের (মাওলানা জোবায়ের অনুসারী) প্রথম পর্ব দুইভাগে ভাগ করে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা করার। এছাড়া আমাদের বর্তমানে কোনো সমস্যা নেই। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবেই বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।’

এদিকে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৭টি স্পেশাল ট্রেন চালু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর মধ্যে শুধু ২ ও ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-টঙ্গী ও টঙ্গী-ঢাকা রুটে দুটি জুমা স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া ৩ ও ১০ ফেব্রুয়ারি জামালপুর-টঙ্গী রুটে একটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। আখেরি মোনাজাতের দিন (৪ ও ১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা-টঙ্গী রুটে পাঁচটি ও টঙ্গী-ঢাকা রুটে পাঁচটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।

এছাড়া টঙ্গী-ময়মনসিংহ রুটে চলবে একটি স্পেশাল ট্রেন। পাশাপাশি টঙ্গী-টাঙ্গাইল রুটে একটি এবং ঈশ্বরদী-টঙ্গী-ঈশ্বরদী রুটে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া সব আন্তঃনগর মেইল, এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনে কোচের প্রাপ্যতা এবং যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী যথাসম্ভব অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে বলেও জানান মুফতি জহির ইবনে মুসল্লি।

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে সকল ধরনের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করছি।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ হাজারের অধিক সদস্য ময়দান ও তার আশপাশে মোতায়েন করা হবে এবং পুরো ময়দানজুড়ে সিসিটিভি স্থাপন করা হবে।’

এ বিষয়ে গাজীপুর ডিসি আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, ‘বিশ্ব ইজতেমায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম করা হবে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে।’

নয়াশতাব্দী/ডিএ/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ