ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

মসজিদে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

প্রকাশনার সময়: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:০২

কক্সবাজারের চকরিয়ায় জুমার নামাজ চলাকালীন মসজিদ দখলে নিতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মুসল্লিসহ আটজন আহত হয়েছেন। পরে প্রশাসেনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে উপজেলা পৌর শহরের সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন— মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীর, পৌর যুবলীগ সভাপতি হাসানগীর হোছাইন, জহিরুল ইসলাম, জয়নাল হাজারী, সাইফুল ইসলাম, কফিলউদ্দিন ও বশির আলম।

মুসল্লিরা জানান, দুপুর ১টার দিকে চকরিয়া পৌর শহরের সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের খতিব হাফেজ বশির আহমদ বয়ান শেষ করার পরপরই বক্তব্য দিতে ওঠেন নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শহীদ। ওই সময় তাকে বাধা দেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর। এতে মুসল্লিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ‘নতুন কমিটি মানি না’ বলে আলমগীর গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে আলমগীর ও তার সহযোগীদের মসজিদের ভেতরেই মারধর করেন। এ সময় মুসল্লিরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।

তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম মসজিদে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে পুনরায় খুতবা ও জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘১৯৬৫ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে কমিটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হয়ে আসছিল। কিন্তু মসজিদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীরের নেতৃত্বে কয়েকজন বখাটে যুবক পরিকল্পিতভাবে মসজিদের ভেতরে হামলা করে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর কোনো দিন ঘটেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি জুমার নামাজের পূর্বে খতিব থেকে অনুমতি নিয়ে কমিটি ঘোষণা নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করি। ওই সময় সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীর বাধা সৃষ্টি করলে মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে জোর প্রতিবাদ করে।’

কমিটির বর্তমান সভাপতি জাহাঙ্গীর হোছাইন বলেন, ‘মসজিদের একটি নির্বাচিত কমিটি থাকার পরও সাবেক সংসদ সদস্যের ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে তারা একটি কমিটি দেয়। ৮ মাস ধরে ওই কমিটির নেতৃত্বে মসজিদের সহায় সম্পদ ও লাখ লাখ টাকা লুটপাট হয়েছে। শুক্রবার সাবেক সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে মুসল্লিদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমাদের কমিটির মেয়াদ আরও অনেকদিন রয়েছে। এ অবস্থায় আরেকটি কমিটি ঘোষণা হচ্ছে দেখে প্রতিবাদ করায় আমার ওপর হামলা চালানো হয়।’

এদিকে জুমার নামাজের পরপর সংবাদ সম্মেলন করেন সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের নতুন কমিটির সদস্যরা। মসজিদের পবিত্রতা ও সুনাম নষ্টকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদ হচ্ছে মুসলমানদের পবিত্র স্থান। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা ইবাদত করি। অথচ মসজিদের ভেতরে কমিটি গঠন নিয়ে দুপক্ষের মারামারি অন্যায় কাজ। কমিটি গঠন নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে জানাতে পারে। আইন হাতে নেওয়া অপরাধ। উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই।’

কক্সবাজার সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) রাকিব উর রাজা বলেন, ‘চকরিয়া পৌর শহরে মসজিদে মুসল্লিদের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরিবেশ শান্ত করার পর পুনরায় জুমার নামাজ আদায় করা হয়। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নয়া শতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ