ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ধলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। জরাজীর্ণ টিনের দোচালা ঘরে চলছে পাঠদান। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ব্যবহার উপযোগী শৌচাগারের অভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালীয়াডাঙ্গা বাজার থেকে শিশুতলা রোডে ধলার মোড় নামক স্থানে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত।
ধলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করানো হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষক ও তিনজন সহকারী শিক্ষক সম্পূর্ণ সেচ্ছাশ্রমে বিভিন্ন শ্রেণির ৭০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন।
ধলা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জন ঘোষ স্কুলের নামে ৩৩ শতাংশ জমি দান করেন। ওই জমিতে নির্মিত টিনের তৈরি চারটি কক্ষের একটি অফিস কক্ষ ও তিনটিতে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভঙ্গুর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণের জন্য বেঞ্চ, ব্লাকবোর্ডসহ শিক্ষার সাথে সংস্লিষ্ট সরঞ্জামাদী অপ্রতুল।
এই ইউনিয়নের দাদপুর ও ত্রিলোচনপুর গ্রামের মাঝামাঝি ধলা গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়। ধলা গ্রাম থেকে পার্শ্ববর্তী গ্রামে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বেশ দূরে হওয়ায় এই গ্রামের শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা বেসরকারি এ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এখানে পাঠদানকারী শিক্ষার্থীদের থেকে নেওয়া হয় না মাসিক কোনো বেতন। বিদ্যালয়ের পরিচালনায় প্রয়োজনীয় খরচ শিক্ষকরা ব্যক্তিগত তহবিল থেকে করে থাকেন বলে জানা যায়।
সরেজমিন বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার স্বাভাবিক পরিবেশ সেখানে নেই। বিদ্যালয়টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ব্যবহার উপযোগী শৌচাগারের অভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
পঞ্চম শ্রেণির পার্থ ঘোষ জানায়, প্রথম শ্রেণি থেকে সে এই বিদ্যালয়েই পড়ছে। বিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষার্থী তাদের ধলা গ্রামের। কর্তৃপক্ষের কাছে লেখাপড়ার উপযুক্ত পরিবেশ, ভালো বেঞ্চ, শ্রেণিকক্ষ ও শৌচাগারের দাবি করে এই শিক্ষার্থী।
ধলা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা আবেদ আলী জানান, আমাদের গ্রামের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছের দাবি করছি।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহামিনা ইয়াসমিন বলেন, ধলা গ্রামের একমাত্র বেসরকারি এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা থাকা পরেও আমরা শিক্ষকরা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। জরাজীর্ণ এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহামুদ হাসান বলেন,এই বিদ্যালয়টি সম্পর্কে আমার জানা নাই। যদি বিদ্যালয়টি আইপিইএমআইএস এর তালিকাভুক্ত না হয়ে থাকে, খোঁজ-খবর নিয়ে তালিকাভুক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করব। একই সাথে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে অবগত করা হবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ