মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম দেওয়ানের (৫২) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর বাদামতলীর বি বাড়িয়া নামক একটি হোটেল থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রেখে আসেন। রাত হওয়ার কারণে শুক্রবার ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মঞ্জু দেওয়ান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ, হোটেল কর্তৃপক্ষ ও সিসিটিভির ফুটেজ থেকে জানা যায়, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম দেওয়ান হোটেল বি বাড়িয়ায় এসে একটি রুম বুকিং করে। এরপর তিনি রুমে গেলে কিছুক্ষণ পরে পানি নিতে আসেন এবং পুনরায় রুমে ফিরে যান। পরে বৃহস্পতিবার বিকেল হয়ে গেলেও তিনি রুম থেকে বের হননি। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই মঞ্জু দেওয়ান জানান, প্রতিদিন নিজস্ব গাড়ি নিয়ে ঢাকায় গিয়ে ব্যবসা করতেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকার তেলঘাট সংলগ্ন ৯১ মার্কেটে থান কাপড়ের ব্যবসা ছিল। গতকাল বুধবার সকালে বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকা যান তিনি। পরে ১১টার দিকে দোকানের ম্যানেজারকে ফোন করে জানান তার আসতে দেরি হবে। কেন না তিনি তাগাদায় যাচ্ছেন। এরপর থেকে ফোন বন্ধ এবং অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, আমার ভাইকে গত দেড় মাসের ব্যবধানে আরও দুইবার অপহরণ করা হয়েছিল। পরে উদ্ধার করা হলে তিনি কারও নাম আমাদের বলেনি। শুধু বলতেন যদি আমি কাউকে এ ঘটনা বলে দেই তাহলে আমাকে মেরে ফেলবে। অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
নিহত শামীমের ভাতিজা সম্রাট দেওয়ান ঘটনাস্থল থেকে রাত ৮টার দিকে জানান, আজ নিয়ে ৩ বার নিখোঁজ হয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় কেরাণীগঞ্জ থানায় বৃহস্পতিবার সকালে নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করা হয়। আজ সন্ধ্যায় হাসপাতালে খোঁজ নিতে গিয়ে চাচার মরদেহ চোখে পরে।
লৌহজং থানার এএসআই আলমগীর হোসেন জানান, এর আগেও শামীম দেওয়ান নিখোঁজ হয়েছিল। আমাদের থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়। পরে নাম্বার ট্রেকিং করে ফরিদপুরের একটি হোটেলে লাস্ট লোকেশন পাই। এরপর হোটেলের ম্যানেজারের সাথে কথা বলে তাকে উদ্ধার করি এবং জানতে পারি তিনি ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিতে চেয়েছিলেন, এমতাবস্থায় হোটেল কর্তৃপক্ষ আওয়াজ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর শামীম দেওয়ান আমাদের থানায় এসে জিডিটি তুলে নেন।
নিহত শামীম উপজেলার দক্ষিণ হলদিয়া গ্রামের মৃত হাকিম দেওয়ানের ছেলে। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে শামিম নিহত হয়েছেন বলে পরিবারের সদস্যদের ধারণা।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ