চাঁদার টাকা না পেয়ে রাজশাহীর পুঠিয়ায় বানেশ্বর হাটের ইজারাদার ওসমান আলীকে (৫৮) মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) মারধরের প্রতিবাদে দোকানপাট বন্ধ রাখেন এবং বাজারে বিক্ষোভ-মিছিলও করেন।
ভুক্তভোগী ওসমান আলী উপজেলার বানেশ্বর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তার বানেশ্বর বাজারে সার ও কীটনাশকের দোকান রয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে ওসমান আলী তার নিজের দোকানেই হামলার শিকার হন। এ নিয়ে রাতেই বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
অভিযুক্তরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা ও ডিস ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, মো. জুয়েল (৩০), মো. সাদেকুল (৩১), হামিদ ড্রাইভার (৪০), মো. মেহেদী (২৫), জহিরুল ইসলাম (৩২), মো. নাসির (৩৫) ও মো. সাগর (৪০)। তাদের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী ওসমান আলী বলেন, ‘দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি বানেশ্বর হাট ইজারা নিয়ে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছেন। তিনি সরকারকে ন্যায্য দর দেন বলে অন্যরা কম টাকায় হাটটি ইজারা নিতে পারেন না। এ জন্য আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ তার ওপর ক্ষুদ্ধ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে হাটটি আবার ইজারা দেওয়া হবে। এই ইজারা প্রক্রিয়ায় তিনি যেন অংশ না নেন তার জন্য ভয় দেখাতে এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।’
ওসমান বলেন, বুধবার বিকেলে তিনি দোকানে বসেছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা কালামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার দোকানে যায়। তারা প্রথমেই ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দোকানের শাটার বন্ধ করে দিয়ে তাকে মারধর করে। এরপর সন্ত্রাসীরা ওসমানের পকেট থেকে এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। যাওয়ার সময় তাকে শাসানো হয়। বলা হয় এখন থেকে তারা যা বলবে তা শুনতে হবে। তা না হলে হত্যা করে মরদেহ গুম করে দেওয়ার হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘তার ওপর হামলাকারীরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। এর আগে তারা বানেশ্বর বাজারে ব্যাংক ভাঙচুর করেছিল। তাদের এই হুমকিতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দোকানে গিয়ে তার ওপর হামলার সমস্ত ঘটনা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তার কাছে ফুটেজ আছে। তিনি হামলাকারী এই সন্ত্রাসীদের শাস্তি দাবি করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে ওসমান আলীর মেয়ে শামসুন নাহার উর্মি, জামাতা আবদুল কাদের, রোমান উদ্দীন সজীব ও বেয়াই রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন। এ হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ব্যবসায়ীরা বাজারের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ রাখেন। দুপুরে তারা বিক্ষোভ-মিছিল করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ওসমান আলী আমাকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেন। তাই আমার ছেলেরা গিয়ে একটু ধাক্কা দিয়ে এসেছে। এর বেশি কিছু না। সকালে আমার ছেলেদের মারধর করা হয়েছে। আমরাও মামলা করছি।’
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, ‘ওসমান আলী যে অভিযোগ দিয়েছেন তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হচ্ছে। কালামও একটা অভিযোগ দিয়েছেন। সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা এলাকাতেই এখন আছি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
নয়া শতাব্দী/ডিএ/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ