কক্সবাজার সদরের কলাতলী ও সৈকত পাড়ায় সরকারি পাহাড় কাটার দায়ে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক)-এর সাধারণ সম্পাদক পল্লবসহ ৮ জনকে আসামি করে দুটি মামলা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে পরিবেশ অধিদফতরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট মো. আবদুছ ছালাম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন।
কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. কাইছার হামিদ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংশ্লিষ্ট আইনে মামলাটি নথিভুক্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এর মধ্যে কক্সবাজার বাইপাস সড়কের কলাতলী এলাকার বিকাশ বিল্ডিংয়ের পাহাড় কাটার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, উখিয়ার রাজাপালং এলাকার ছিদ্দিক আহম্মদের ছেলে মো. ইলিয়াছ, কলাতলী আদর্শ গ্রামের মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে শাহ আলম, লাইট হাউজ পাড়ার মৃত হামিদ হোসেনের ছেলে সালামত উল্লাহ, সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার মৃত আবদুল হামিদেরে ছেলে মো. ইউনুছ, হাজিপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. ফয়সাল, তারাবনিয়ার ছড়ার মৃত মো. আলীর ছেলে মো. সেলিম ও কলাতলী এলাকার মৃত জাফর আলমের ছেলে নুরুল আলম ভূট্টো।
অপরদিকে কলাতলীর সৈকতপাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার ঘটনায় দায়ের করা মামলা এজাহারে শুধুমাত্র ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা পল্লবের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামি করা হয়।
গত ১১ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিকাশ বিল্ডিং এলাকা ও সৈকতপাড়ায় পাহাড় কাটার ঘটনা নিয়ে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করে। প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসার পর ১৪ জানুয়ারি পরিবেশ আদালত কক্সবাজারের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ সংবাদটি আমলে নিয়ে মামলা দয়ের করেন।
মামলার আদেশে আদালত উল্লেখ করেন, ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৯০(১)(গ) মতে আদালত ওই ঘটনা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমলে নেয়ার এখতিয়ার রাখেন। ওই বিষয়ে সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নয় এমন কর্মকর্তা কর্তৃক ঘটনাস্থল পরিদর্শনপূর্বক ঘটনা সংঘটন সাপেক্ষে ঘটনার বিষয়ে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী ২১ জানুয়ারি সশরীরে হাজির হয়ে স্থিরচিত্রসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজারের পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কলাতলীর বাইপাস এলাকার বিকাশ বিল্ডিং থেকে একটি এস্কেভেটর জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুসের জিম্মায় দেয় প্রশাসন। একই সঙ্গে লাইট হাউজ এলাকায় পাহাড় কাটার স্পটটি সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। কিন্তু ১৬ জানুয়ারি ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুসকে মারধর এবং অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে প্রশাসনের জব্দ করে জিম্মায় দেয়া এস্কেভেটর ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল অস্ত্রধারী। একই সঙ্গে লাইট হাউজ এলাকায় সিলগালা করে দেয়ার পর তা ভেঙে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা পল্লব।
এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। যেখানে আসামি করা হয়েছে ৭ জনকে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ