ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পিক ভিটামিনে নষ্ট আলুর খেত, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

প্রকাশনার সময়: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৪২

লাভের আশায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আলুর আবাদ শুরু করেছিলেন নজমুল ইসলাম। স্বপ্ন ছিল লাভের টাকায় ঋণ পরিশোধ করে সংসারে ফিরিয়ে আনবেন সচ্ছলতা। শুরুর দিকে আলু গাছের উর্বরতা দেখে খুশি ছিলেন তিনি। চলতি মাসের আট তারিখ খেতের পুষ্টি বাড়াতে ‘পিক' নামে একটি মাইক্রো পুষ্টি কীটনাশক ব্যবহার করেন তিনি। পরের দিন থেকে আলু খেতে পচন ও নষ্ট হওয়া শুরু হয়। তারপর থেকে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নজমুল ইসলাম। আলু খেতের শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন তিনি।

শুধু নাজমুল নন তার মতো একই গ্রামের আরও ১০ কৃষক এসএএম (SAM) এগ্রো কেমিক্যালের মাইক্রো ভিটামিন ‘পিক’ কীটনাশক ব্যবহার করে আলু খেত নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। সেই গ্রামের ১০ জন কৃষকের ৭ একর জমির আলুর খেতে পচন ধরেছে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, আলুর গাছগুলো মরে যাওয়া শুরু করেছে। আর আলুর শিকড়ে পচন ধরে সেগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। খেতের এমন দুরাবস্থা দেখে দিকবিদিক শূন্য হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা।

আলু চাষি নজমুল ইসলাম বলেন, শুরুতে আমার আলু গাছগুলো বেশ ভালো ছিল। পিক ব্যবহার করার পরের দিন থেকে গাছগুলো মরে যাওয়া শুরু করে। নিচের শেকড়ে পচন হয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই। সেটা না হলে কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব।

চাষি বাচ্চু বলেন, আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে যা খরচ হয়েছে সেটি আমাদের দেওয়া হোক। তাদের কীটনাশক ব্যবহার করে আমাদের সব শেষ হয়ে গেল।

কীটনাশক বিক্রেতা আলম হোসেন বলেন, এই কোম্পানির কীটনাশক অনেক দিন থেকে বিক্রি করে আসছি। এর কাজও অনেক ভালো। এবারে যারা পিক কীটনাশক দিয়েছেন সবার আলু খেত নষ্ট হয়ে গেছে। আমি কোম্পানির লোককে অবগত করেছি, তারা দেখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

এসএএম এগ্রো ক্যামিকেলের এরিয়া ম্যানেজার নুরুজ্জামান বলেন, পিক ব্যবহার করার কারণে এমন হয়েছে। আমি সরেজমিনে দেখে আমারও এটি মনে হয়েছে। সকলে পিক ব্যবহার করার কারণে নষ্ট হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলেন জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এমন খবর শোনার পর আমরা সেই খেতগুলোতে গিয়েছিলাম। সে খেতগুলোতে আর আলু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এরই মধ্যে আমরা কীটনাশকটি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। এটি যাতে আর বিক্রি না হয় এবং কৃষকদের ক্ষতিপূরণে আমরা সমন্বয় করছি।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ