ঢাকা, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নওগাঁ ১৬ মিল মালিককে জরিমানা, তিন গোডাউন সিলগালা

প্রকাশনার সময়: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৪

উত্তরের খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁয় ভরা আমন মৌসুমেও হঠাৎ করে বেড়েছে চালের দাম। এতে চরম ভোগান্তিতে পরে নিম্ন আয়ের মানুষরা। অপরদিকে নড়েচড়ে বসে সরকার। পরবর্তীতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলার ১১টি উপজেলায় অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন।

অবৈধভাবে ধান-চাল মজুদ করার অপরাধে জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতিসহ ১৬ জন মিল মালিককে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সাথে ৩টি গোডাউন সিলগালা করা হয়েছে।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) জেলা সদর, মহাদেবপুর, মান্দা ও পত্নীতলায় পৃথক এলাকায় দিনব্যাপী মজুদ বিরোধী অভিযান চালিয়ে এই দণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলে এসব তথ্য জানানো হয়।

মিডিয়া সেলে বলা হয়, ধান-চালের অবৈধ মজুদ খুঁজতে গত শনিবার দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জেলার সদর, মহাদেবপুর, মান্দা ও পত্নীতলায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মজুদ বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে নির্ধারিত সীমার চেয়ে অতিরিক্ত ধান-চাল

মজুদ রাখায় শহরের আনন্দনগর মহল্লার আর এম রাইস মিলের মালিক রফিকুল ইসলাম রফিককে এক লাখ টাকা জরিমানা ও ৩টি গোডাউন সিলগালা করা হয়।

তছিরন অটোমেটিক রাইস মিলের মালিককে এক লাখ টাকা, মেসার্স এম এম অটো রাইস মিল মালিককে ৫০ হাজার টাকা, মফিজ উদ্দিন অটোমেটিক রাইস মিলের মালিককে ৫০ হাজার টাকা, মেসার্স জায়েদা ট্রেডার্স মালিককে এক লাখ টাকা, মেসার্স সুফিয়া অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

মহাদেবপুর উপজেলার নাহার আরমান অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ৩০ হাজার টাকা, শাপলা

অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ২০ হাজার টাকা, দাদা অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও জাহিদ অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে ও মক্কা মদিনা অটোমেটিক রাইস মিল মালিককে জরিমানা করা হয়।

মান্দা উপজেলার সাবাই হাট এলাকায় অবৈধ ধান মজুদের দায়ে এবং লাইসেন্স না থাকার জন্য ফয়জুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা ও সুমন কুমার নামে আরও এক ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পত্নীতলা উপজেলায় লাইসেন্স ছাড়া ধান মজুদের দায়ে আরও ৩ ধান ব্যবসায়ীকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

চারদিনের ব্যবধানে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে নওগাঁর বাজারে প্রতি মণ ধানের দাম কমেছে ৬০ থেকে ২শ টাকা। আর পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা করে কমতে শুরু করেছে। তবে খুচরা বাজারে এখনও আগের দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। গুদামে অবৈধ মজুদ বিরোধী অভিযানের ভয়ে চালকল মালিক ও ধান আড়তদাররা স্থানীয় বাজার থেকে ধান কেনা কমিয়ে দেওয়ায় ধানের দাম কমতে শুরু করেছে। অপরদিকে হঠাৎ করে ধানের দাম প্রতি মণে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কমে যাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।

নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ী উত্তম সরকার বলেন, অভিযানের পরই মজুদদাররা পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি চালের দাম কিছুটা কমিয়েছে। তবে এই প্রভাব খুচরা বাজারে পড়তে আরও দুই-একদিন সময় লাগবে। কারণ আমরা বর্তমানে আগের বেশি দামে কেনা চালগুলো বাজারে বিক্রি করা শেষ করতে পারিনি। তাই কম দামে কেনা চালগুলো এখনও বাজারে আসতে শুরু করেনি। তবে আর কয়েকদিনের মধ্যে চালের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আমি মনে করি।

জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা জানান, অবৈধভাবে মজুতকৃত এসব ধান-চাল সঠিকভাবে খোলাবাজারে বিক্রি নিশ্চিত করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) সমন্বয়ে টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি তদারকি করবে। ধান-চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে মজুদ বিরোধী এই অভিযান চলমান থাকবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ