পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার শারীরিক মিলনে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন এক নারী। এ কারণে স্ত্রী ও অনাগত সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে সোহাগ হাওলাদার (৩৫) নামে এক যুবকের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে সোহাগ হাওলাদারসহ দুজনের নামে কলাপাড়া থানায় ওই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, সোহাগ হাওলাদার এবং ওই নারীর বাড়ি উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের পক্ষিয়াপাড়া গ্রামে। ২০১৯ সালে পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে সন্তানসহ ঢাকায় গিয়ে চাকরি শুরু করেন তিনি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ওই নারী ঢাকা থেকে বাড়িতে আসলে, পূর্বপরিচিত হওয়ায় বিভিন্ন সময় তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন সোহাগ। এতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে তিনি ওই নারীকে ভয়ভীতি দেখাতেন। এক পর্যায়ে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে, সোহাগ ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিবার একান্তে মিলিত হন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় চার মাস আগে সোহাগ তাকে বিয়ের কথা বলে ঢাকার গাজীপুরে একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান এবং ভূয়া কাজী এনে বিয়ের মিথ্যা নাটক সাজান। পরবর্তীতে তারা একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। তবে গত ১৫ নভেম্বর ওই নারীকে ওই ভাড়া বাসায় রেখে সোহাগ পালিয়ে আসেন। এর কয়েকদিন পর স্বামীর খোঁজে ওই নারীও এলাকায় চলে আসেন।
গত ১০ জানুয়ারি ওই নারী নিজের শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখে ডাক্তারী পরীক্ষা করে জানতে পারেন যে, তিনি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানার পর, ওই নারীর সঙ্গে পুরোপুরি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন সোহাগ হাওলাদার এবং তাদের বিয়ের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। পুরো ঘটনা সোহাগের বাবা মজিবুর হাওলাদারকে জানালে, তিনি ওই নারীকে জ্বরের ওষুধ কিনে দেওয়ার কথা বলে সন্তান নষ্ট করার পায়তারা করেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি সোহাগের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চাইনি। তিনি প্রথমে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রেমে রাজী করান। আমাকে তিনি বেশ কয়েকবার বিয়ের কথা বলেন। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে নিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিলিত হন। পরে বিয়ে করার কথা বলায়, আমি বিষয়টি লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে জানাইনি। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরও সোহাগের পরিবারসহ এলাকার অনেকের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ধরনা দিয়েছি। কিন্তু কেউই আমার বিষয়টি দেখেনি। আমি এখন স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতি চাই।
এ নিয়ে সোহাগের কাছে জানতে চাইলে, তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মদ জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনতগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ