ময়মনসিংহের ত্রিশালের একদল স্থানীয় স্বপ্নবাজ তরুণ, যারা দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে উঠলেও তাদের স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়া। গড়েছেন স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশন। যার মাধ্যমে পরিচালিত হয় স্বপ্নবিলাস ইয়োথ সোসাইটি, স্বপ্নবিলাস উন্মুক্ত পাঠাগার, বই পড়া উৎসব 'সুবোধ' সহ নানামুখী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জনহিতকর কর্মসূচি।
বিগত কয়েকবছর ধরে উপজেলার পোড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তারা আয়োজন করে পৌষালী পাঠোৎসব। এটি ছিল তাদের তৃতীয় আয়োজন। বৃহস্পতিবার বিকেলে শুরু হওয়া উৎসবের শুক্রবার ছিল শেষ দিন। প্রথমদিন বিকেল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হয় মেলায় আগত বিভিন্ন স্টলগুলো। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
স্বপ্ন বিলাস ইয়োথ সোসাইটি ও স্থানীয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিনয়ে রাতে মঞ্চস্থ হয় বিখ্যাত নাটিকা রবী ঠাকুরের ডাকঘর নাটক অবলম্বনে বিরচিত নাটক 'অমল'।
উৎসবে ছিল বই মেলা, পিঠা উৎসব, বিভিন্ন মৃৎ ও হস্ত শিল্পের প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাটিকা, কবিতা আবৃত্তি, লোকগীতি ও কনসার্ট।
উৎসবকে ঘিরে খেলার মাঠে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গ্রামীণ পরিবেশ, গ্রামীণ ঐতিহ্য। লোক সংস্কৃতির যে দৃশ্যগুলো চোখে পড়ার মতো। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে পার্শ্ববর্তী স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নবীন-প্রবীণ ও বিভিন্ন সুধীজনের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল উৎসব প্রাঙ্গণ। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
উৎসবের শেষ দিন রাতে কবিতা আবৃত্তি, লোকগীতি ও কনসার্টের মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
ব্যতিক্রমী ওই আয়োজনে এলাকার মানুষের মাঝে ভিন্ন আমেজের ভালো লাগা সৃষ্টি হয়েছে, উৎসবটি মন কেড়েছে হাজারো উৎসুক জনতার।
পৌষালী পাঠোৎসবে আগত দর্শনার্থী স্কুল শিক্ষক মাসুদ পারভেজ নয়া শতাব্দীকে বলেন, 'এ ধরনের আয়োজন গ্রামীণ পরিবেশে আমরা তেমন দেখতে পাই না। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে নিয়মিত এমন আয়োজন হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশনের স্বপ্নবিলাস ইয়োথ সোসাইটিকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাবো।'
স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক খালেদ হাসান শান্ত নয়া শতাব্দীকে বলেন, 'আধুনিকতার ছোঁয়ায় জীবনে প্রায় হারাতে বসা গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতেই এ আয়োজন। একঝাক তরুণ সংস্কৃতি প্রেমী শিক্ষার্থীদের নিরলস প্রচেষ্টায় পাঠোৎসবটি বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে আশপাশের গ্রামের মানুষের মধ্যে এক উৎসবের আমেজ তৈরি করেছে। আমরা বাঙালির সাংস্কৃতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে তুলে ধরতে বাঙালি সংস্কৃতি নিয়েই এই আয়োজন করেছি।'
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ