ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
তালা উপজেলায় করোনার কৃষি ঋণ ৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকা

ঋণ নিয়ে লাভবান অধিকাংশ কৃষক

প্রকাশনার সময়: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৪৮ | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৫২

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়াসহ কৃষি খাতে আর্থিকভাবে হয়ে পড়েছে দুর্বল।

তাই কৃষি খাতকে পুনরায় আর্থিকভাবে শক্তিশালী করতে করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি সামলে উঠতে গ্রামের প্রান্তিক চাষিদের জন্য সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এর মধ্য তালা উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকা।

“কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃ অর্থায়ন স্কিমটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ ১ শতাংশ সুদ হারে পুনঃ-অর্থায়ন সুবিধা পাবে। আর গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ।

ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণের মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক হাজার কোটি টাকার মত ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে।

তালা উপজেলা কৃষি ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, কৃষি খাতকে ৫টি ভাগে ভাগ করে ৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ভাগ হিসেবে, হার্টিকালচার খাতে ১৩০ জনকে মোট ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। মৎস্য খাতে ৩২২ জনের জন্য ৫ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। প্রাণীসম্পদ খাতে ১৬ জনকে ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকা। এছাড়া পোল্ট্রি খাত ও ডেইরি খাতে তালা উপজেলা কোন ঋণ বিতরণ করা হয়নি।

করোনা মহামারির সংকটে কৃষি খাতকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় কৃষি খাতে আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার ফলে অনেকটা আশার আলো খুঁজে পেয়েছেন সাধারণ কৃষকরা। তারা আবার নতুন করে তাদের কৃষি খাতকে দেশের উন্নয়নের সিংহভাগ অংশীদারি হওয়ার সুযোগ করে নিতে পারছেন।

ঋণ গ্রহণকারী কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বলরে মধ্য আমাদের কৃষিখাত অন্যতম। তাই কৃষি খাতকে আবার জাগিয়ে তুলতে সরকার যে বরাদ্দ বা ঋণ প্রদান করছেন তাতে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছে। এই ঋণ মাত্র ৪ শতাংশ সুদ ও শোধ করার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে ১ বছর। আমরা ঋণ নিয়ে ১ বছরের মধ্য আবার আর্থিক ভাবে পূর্বের অবস্থানে ফিরে যেতে পারবো। এবং নিজেরা লাভবান হবো। আমাদের মধ্য অনেকে ঋণের টাকা শোধ করতে শুরু করেছেন। আশা করছি সবাই এই টাকা পরিশোধ করতে পারবো।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম জানান, দেশের উন্নয়ন খাতের বড় একটি অংশ কৃষিখাত হতে আসে। করোনাভাইরাসের কারণে সেই কৃষি খাতে অনেকটা ধস নেমে এসেছিল কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সেই ধস কাটিয়ে ওঠার জন্য কৃষি ঋণের একটা ব্যবস্থা করেছেন। এতে করে কৃষি খাত আরো সুদূরপ্রসারী হতে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

তালা উপজেলা কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. সেলিম বলেন, প্রান্তিক চাষিদের জন্য সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। এই ঋণের আওতায় তালা উপজেলা ৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে গতবছর। বিভিন্ন কৃষি খাতে বিতরণকৃত কৃষি ঋণের সময়সীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে গিয়েছে। আমরা কয়েকে দিনের ব্যবধানে প্রায় ১ কোটি টাকা ঋণ ফেরত পেতে সক্ষম হয়েছি। বাকী সময়ের মধ্য বিতরণকৃত টাকা গুলো ফেরত পাবো বলে আশা করছি। করোনা ভাইরাসের কারণে আর্থিকভাবে বিপাকে পরা অধিকাংশ কৃষকরা এই ঋণ নিয়ে লাভবান ও নতুন করে তাদের কৃষি খাতকে সচল করতে পেড়েছেন।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ