সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে যারা অপকর্ম করছেন কিছু কিছু জায়গায় তারা বেশি শক্তিশালী, তারা সরকারের যেকোনো বাহিনীকে ব্যবহার করে আমাদের ক্ষতি করতে পারে, এসব তো গোপন কিছু না, অহরহই হচ্ছে। তবে এসব অপকর্ম রুখতে আমাদেরকে সংঘবদ্ধ হতে হবে। প্রকৃতির যা কিছু আছে, যত সম্পদ আছে এসব কিছুর মালিক কিন্তু জনগণ। তাই আমার সম্পদ আমাকে রক্ষা করতে হবে। আমার নদী, ফসল, হাওড় আমাকেই রক্ষা হবে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে চারটার দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বারেকটিলা সংলগ্ন বালুচর এলাকায় পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সংগঠন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’ এর আয়োজনে জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলার বারেকটিলা সংলগ্ন বালুচর এলাকায় অনুষ্ঠিত এ সভায় তিনি আরও বলেন, আপনারা এখানকার সন্তান। এ অঞ্চল আপনাদের জীবিকা উপার্জনের সুযোগ তৈরি করে দেয়, কাজেই এ অঞ্চলটা আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনাদেরকেই প্রথমে বলতে হবে এ জায়গার কোনো ক্ষতি করা চলবে না। এ জায়গায় এমন কোনো কর্মকাণ্ড চলতে দেয়া যাবে না, যা আমাদের রিজিক কেড়ে নেবে।
তিনি আরও বলেন, কখনই নিজের সম্পদ অন্যকে লুট করতে দিবেন না। লুটেরাদের সঙ্গে যাবেন না। যারা ক্ষতি করে তাদের সঙ্গে যাবেন না। নিজেরা সৎ থাকুন, সততার সঙ্গে নিজের সম্পদ রক্ষা করুন।
প্রধান আলোচক শরীফ জামিল বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর বর্ষায় এ অঞ্চলে পাহাড়ি ঢলের সাথে ব্যাপক বালি ও পাথর এসে হাওড়, নদী, ছড়া ও কৃষিজমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির এই বড় বিপর্যয়ে এ অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে। মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধের সাথে সাথে ছড়া ও কৃষিজমি পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতের মেঘালয়ে অপরিকল্পিত খনিজ সম্পদ আহরণের ফলে ঢলের সাথে আসা বালু ও পাথর এসে যাদুকাটা নদী ও টাঙ্গুয়ার হাওড়ের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া বন্ধ করতে আন্তঃদেশীয় পদক্ষেপ দ্রুততার সাথে গ্রহণ করতে হবে।’
এসময় বক্তব্য রাখেন, ‘ধরা’ এর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, ‘ধরা’ এর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আদিবাসী পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক সমন্বয়ক ফাদার জোসেফ গোমেজ, ‘ধরা’ এর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল করিম চৌধুরী কিম, তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুনাব আলী, বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন, বড়দল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুক মিয়া, বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নোয়াজ আলী প্রমুখ।
এর আগে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর পক্ষ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওড় পরিদর্শন করা হয়। যেখানে সভায় অংশগ্রহণকারী প্রধান অতিথি, প্রধান আলোচক, বিশেষ অতিথি ও আলোচকগণ অংশগ্রহণ করেন।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ