লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চরমার্টিন ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের মামলায় এক নম্বর আসামির সঙ্গে স্থানীয় অন্য দুই যুবককে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করে ভুক্তভোগী দুই পরিবার।
এদিকে মামলার প্রকৃত ও এক নম্বর আসামি আব্দুর রহিম ঘটনার পর থেকে গ্রেফতার এড়িয়ে পালিয়ে থাকলেও, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার দুই ও তিন নম্বর আসামি যথাক্রমে মো. জসিম ও ফয়সাল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলহাজতে।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে প্রকৃত দোষীকে গ্রেফতার ও নিরাপরাধ দুই যুবককে মামলা থেকে অব্যাহতিসহ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জসিমের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় সিরাজের ছেলে মো. আব্দুর রহিম মামলার বাদী ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগীর স্বামী এসময় বাড়িতে আসলে তার উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় অভিযুক্ত আব্দুর রহিমকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং শোর-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে ওই গৃহবধূর কক্ষ থেকে অভিযুক্তের মোবাইল ফোন ও গায়ের জামাকাপড় জব্দ করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওমর ফারুক মুন্সীর মধ্যস্থতায় আব্দুর রহিমকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
জান্নাতুল ফেরদাউস জানান, তার স্বামী মো. জসিম লক্ষ্মীপুরের জকসিন এলাকার একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন রাতে তিনি ওখানেই (ব্রিকফিল্ডে) ছিলেন। অথচ তার নিরাপরাধ স্বামীকে ওই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
এদিকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় ছেলে জসিম কারাগারে থাকায় দুশ্চিন্তায় দিশেহারা তার মা-বাবা। স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস তিন বছরের শিশু মেহেদি হাসানকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে বহু কষ্টে দিনাতিপাত করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন।
জান্নাতুল ফেরদাউস এসময় তার স্বামীকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জসিমের বৃদ্ধ পিতা আলী আহাম্মদ, মা সুফিয়া খাতুন, তিন বছরের শিশু সন্তান মেহেদি হাসান এবং অপর আসামি ফয়সালের বড় ভাই রুবেল হোসেন ও মামা আব্দুস সাত্তার, স্থানীয় বাসিন্দা আমান উল্লাহ ও মো. আব্বাছ উদ্দিন।
এসময় আমান উল্লাহ ও মো. আব্বাছ উদ্দিন জানান, ধর্ষণ মামলার সঙ্গে ইটভাটা শ্রমিক জসিম ও ফয়সালের কোনো সম্পৃক্ততা নাই। তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে, তারা নির্দোষ। বিনাদোষে তারা আজ কারাগারে।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে পরকীয়ার জেরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, মামলাটির তদন্ত চলমান। গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে নিজ ঘরে ধর্ষণের শিকার হন দুই সন্তানের জননী। পরে ওই ঘটনায় প্রতিবেশি অভিযুক্ত মো. আব্দুর রহিমকে প্রধান আসামি করে তিন জনের নামে কমলনগর থানায় মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ।
নয়া শতাব্দী/ডিআইএ/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ