কক্সবাজারের চকরিয়ায় আবুল কালাম আবু (৪৫) নামের এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে অপহরণের পর হাত-পা বেঁধে এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এসময় ছুরিকাঘাতে চোখ উপড়ে ফেলেছে। পরে মারা গেছে মনে করে তাকে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায় তারা।

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার পূর্ব ভেওলা ইউনিয়নের আটারকুম এলাকা থেকে আবুকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

গুরুতর আহত আবুল কালাম আবু চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি আওয়ামীলী স্বেচ্ছাসেবকলীগের কক্সবাজার জেলার সাবেক সদস্য। এবং সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুলের ছোট ভাই। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বেড়েই চলেছে কক্সবাজারের চকরিয়ায়। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও মারামারি, জমি দখল, মৎস্য ঘের দখল, প্যারাবন কাটাসহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ছোট ভাই আবু কক্সবাজার যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। গাড়ির জন্য সাহারবিল এলাকাস্থ সড়কে দাঁড়ালে একদল সন্ত্রাসী থাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা জোর করে আবুকে দিয়ে বাড়িতে মোবাইল করে কক্সবাজার পৌঁছাই বলে নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে তারা আবুকে সারারাত মারধর করে এবং একটি চোখে ছুরিকাঘাত করে মঙ্গলবার সকালে পূর্ব ভেওলা ইউনিয়নের আটারকুম এলাকায় ফেলে রেখে চলে যায়।

এরপর স্থানীয়রা সেখান থেকে মূমুর্ষ অবস্থায় আবুকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ওইসময় হাসপাতালের চিকিৎসক আবুর অবস্থা দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আবু।

তিনি আরও বলেন, আবুল কালাম আবু জেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছোট ভাই আবু শেখ হাসিনা ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান তথা হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনের দিন সাহারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হাতঘড়ির পক্ষে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনও করেন। মূলত নির্বাচনে হাতঘড়ির পক্ষে ভোট করায় প্রতিপক্ষরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান মহসিন বাবুল। আবুকে এই নির্বাচনের পূর্বেও গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিলো।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আটারকুম নামক স্থান থেকে স্থানীয়রা আবুকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এজাহার পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরই মধ্যে ঘটনাটি কে বা কারা ঘটিয়েছে তা শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর