‘ইয়াবা ব্যবসায়ীরা সরকারের চেয়ে শক্তিশালী কিনা তা দেখে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ইয়াবা কারবারিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাসহ সহায়তাকারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নামও জাতীয় সংসদে প্রকাশ করা হবে।’
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এসব কথা বলেছেন কক্সবাজার-৪ আসনের (উখিয়া-টেকনাফ) সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বদির স্ত্রী শাহীন আক্তার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে আব্দুর রহমান বদি পরপর দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আব্দুর রহমান বদি সংসদ সদস্য থাকাকালীন ইয়াবা কারবার নিয়ে বহুল সমালোচিত ও বিতর্কিত হন। ওই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার একাধিক প্রতিবেদনেও তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠে। এসব প্রতিবেদনে মাদক কারবারিদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তাতেও বদির নাম ছিল এক নম্বরে। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের মামলায় সাজা হলে জেলও খাটেন বদি। পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করে এখনো জামিনে রয়েছেন।
এতে মামলা জটিলতার কারণে একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েও বঞ্চিত হন বদি। তবে নিজে না পেলেও স্ত্রীকে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেন তিনি।
টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুর রহমান বদির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার। সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্সবাজার-৪ আসনের নির্বাচনি সমন্বয়ক মো. ইউনুছ বাঙ্গালীসহ বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানরা।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান বদি বলেন, যে লোক ইয়াবা কারবার করে অবৈধ টাকার মালিক হয়েছেন তাদের এবার রুখে দাঁড়ানো হবে। ইয়াবা কারবারিরা যতই শক্তিশালী হোক না কেনো, তারা সরকারের চাইতে শক্তিশালী কিনা এবার দেখে নেওয়া হবে। কারণ উখিয়া-টেকনাফের মানুষ দেশের যেখানেই যায় সেখানে ইয়াবা কারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে অপবাদ দেওয়া হয়। যারা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেন তাদেরকে আপনারা (সাধারণ মানুষ ও প্রশাসন) সকলেই চিনেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থানীয় সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, আমার কাছে তথ্য রয়েছে টাকার বিনিময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য ইয়াবা কারবারিদের মামলার চার্জশিট থেকে আসামির নাম বাদ দিচ্ছে। চিহ্নিত অনেককে মাদকসহ ধরার পরও ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব ইয়াবা কারবারিদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়, এ ব্যাপারে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাই।
এরপরও যদি চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিদের আইনের আওতায় আনা না হয়, তাহলে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাসহ প্রশাসনের সহায়তাকারীদের নামের তালিকা জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রকাশ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন বদি।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারও ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
যদিও পুরো অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত হয়ে নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকায় থাকা অনেকেই।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ