বাজারে ভরপুর শীতকালীন সবজি চলে আসলেও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে খুচরা বাজারে দাম এখনো কমেনি। গত কয়েক মাস ধরে যে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছিল সবজি সে দাম এখনো রয়ে গেছে। এরই মধ্যে বাজারগুলোতে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। তবে দাম লাগামহীন বলছেন ক্রেতারা।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) উপজেলার সীতাকুণ্ড, বাড়বকুণ্ড ও কুমিরা কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায় কিছু কিছু সবজির দাম কমলেও অধিকাংশ সবজির দাম এখনো অনেক বেশি।
শীতকালীন সবজির মধ্যে রয়েছে, শিম, মুলা, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালংশাক, বেগুন, খিরা ও গাজর নানারকম সবজি। এসব বাজারে শীতের শুরুতে নতুন আলু চলে এসেছে বাজারে। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
অন্যদিকে, সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি ৬০, বাঁধাকপির দাম ৩০ টাকা। প্রতি পিস লাউয়ের দাম ৫০-৭০ টাকা। মৌসুমি শিম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৭০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা ও বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। ঢেঁড়স কেজি প্রতি ৮০-৯০ টাকা, টমেটোর মান অনুযায়ী ৪০- ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি, ধনেপাতা ৮০ টাকা কেজি। গাজর ৬০ টাকা কেজি, খিরা ৪০, লেবুর হালি ৫০ টাকা ও ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
এবছর অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বর্ষার কারণে কয়েকমাস আগে থেকে সবজির দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেছেন শীতের শুরুতে সবজির দাম বেশি থাকবে। তবে উৎপাদন বাড়লে ধীরে ধীরে সবজির দাম কমে আসবে। এছাড়া প্রতিদিনই সীতাকুণ্ডের সবজি বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় যাচ্ছে।
এদিকে খুচরা সবজি বিক্রেতারা ফরহাদ এবং কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী জানান, দাম কম বা বেশির সাথে আমাদের হাত নেই। আমরা যে দামে ক্রয় করি তার থেকে কিছু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। কিছু লাভ না করলে আমরা চলবো কিভাবে। তবে বাজারে সবজি যোগান কম থাকায় দাম বেশি বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে বাজারে মোট দুই ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের পেঁয়াজের দাম ১৪০ টাকা কেজি। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বড় ১১০ এবং ছোট ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চায়না রসুন কেজি ২৪০। টাকা দরে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। আদার দাম ২৬০ টাকা।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি মুরগি ৩১০ টাকা কেজি, সোনালি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা প্রতি কেজি, খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সীতাকুণ্ড বাজারে মায়ের দোয়া মাংস বিতানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. সেলিম জানান, বাজারে সবজিসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লেও গরুর মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কিছুদিন আগেও ঘোষণা দিয়ে গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি করেছি। এখনো ৭০০-৮০০ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, সীতাকুণ্ডে এ বছর দুই হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৫ হাজার কৃষক শিমসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন। এখান থেকে ৪৭ হাজার মেট্রিক টন শিমের উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। প্রথমবারের মতো ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৫০০ কেজি শিম আকাশপথে বিদেশ রফতানি হয়েছে। শিম এখনো ছোট বাজারে অনেক শিম আসেনি। বাজারগুলোতে শিম কম আসছে। সব শিম বের হলে দাম আরও কমবে বলে জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ