ঢাকা, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬

টানা ৫ দিন সূর্যের দেখা নেই গাইবান্ধায়, বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রকাশনার সময়: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫৪

গাইবান্ধায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। এতে ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকাল ৮টায় গাইবান্ধায় মৌসুমের সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ থেকে ৯৯ ভাগ। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে ভারি মেঘের কারণে জেলায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

বেশ কয়েকদিন ধরে বয়ে চলা এমন হাড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের ২০ লাখের বেশি মানুষ। রাত নামলেই পড়ছে ঘন কুয়াশা। সেইসঙ্গে কনকনে ঠান্ডা বাতাস।

এদিকে, ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীত চেপে বসেছে তিস্তা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়া নদী বেষ্টিত এলাকাগুলোতে। বেলা গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় ঠাণ্ডা বাতাস। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সূর্যের দেখা নেই। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। ঠান্ডায় নাকাল হয়ে পড়ছে ছিন্নমূল, অসহায় খেটে-খাওয়া দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। সকালের আলোতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। যদিও রাস্তায় মানুষের সংখ্যা একেবারেই সীমিত। শীতের এই তীব্রতা প্রভাব ফেলেছে কৃষকের ধানের বীজতলাতেও।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের রিকশাচালক আমির হোসেন বলেন, শীতের কারণে ২-৩ দিন ধরে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ঠান্ডার কারণে লোকজন কম বের হওয়ার তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দৈনিক আয়ও কমে গেছে।

সদর উপজেলার কুপতলা ও লক্ষিপুর ইউনিয়নের কৃষি শ্রমিক নুরুন্নবী, খয়বর, আসলাম ও মোশাররফ মিয়া বলেন, তীব্র শীতে হাত-পা জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে মাঠে বেশিক্ষণ থাকাটা খুব কষ্ট।

শহরের নতুন বাঁধ এলাকার ছোনিয়া রানীর ভাষ্য, ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ক্রমাগত ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করায় ২-৩টা কাঁথা-কম্বল দিয়েও শরীর গরম করা যাচ্ছে না।

এদিকে, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ। তাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। শীতজনিত কারণে গত সাত দিনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে দেড় শতাধিক শিশু।

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহাবুব হোসেন বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

তবে এই শীতে শিশু সন্তানের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি জানান, মায়েদের ঘনঘন বুকের দুধ দেওয়ার পাশাপাশি সন্তানকে বুকের উষ্ণতায় রাখতে হবে। রাতে প্রস্রাবের পরপরই পরিষ্কার করে গরম পোশাক পরিয়ে দিতে হবে।

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া বলেন, শীতার্তদের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলার সাত উপজেলায় ৪৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি সহযোগিতায় বিভিন্ন জায়গায় শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ